গাজায় ইসরায়েলের আরোপ করা নজিরবিহীন অবরোধ ভাঙার শপথ নিয়ে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার শেষ নৌযানে রয়েছেন বিশ্বনন্দিত আলোকচিত্রী ও অধিকারকর্মী শহিদুল আলম। তার সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টে উঠে এসেছে গভীর আশঙ্কা ও অনিশ্চয়তার সুর।

শহিদুল আলম লিখেছেন—“সামনে কী অপেক্ষা করছে, তা বোঝার চেষ্টা করছি।” তার এই বাক্যেই স্পষ্ট, ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া অধিকারকর্মীরা বাস্তব বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। ইতোমধ্যে বহরের প্রায় সব নৌকা ইসরায়েলি বাহিনীর কব্জায় চলে গেছে।

সামনে কী হতে পারে?

ফ্লোটিলা ট্র্যাকারের তথ্যমতে, মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে গাজা উপকূলে যাত্রা করা ৪৪টি নৌকার মধ্যে মাত্র চারটি এখনো দখল এড়াতে পেরেছে। বাকি সবগুলোই ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে বা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শহিদুল আলম জানিয়েছেন, তাদের নৌযানটি বহরের একেবারে শেষ প্রান্তে রয়েছে। তার ভাষায়, সামনের নৌকাগুলোতে ইতোমধ্যে হামলা চালিয়ে অনেক অধিকারকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে তাদেরও একই পরিণতির আশঙ্কা জোরালো হয়ে উঠেছে।

বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধের আহ্বান

তবু হতাশ না হয়ে শহিদুল আলম বিশ্বকে জাগরণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন—“পুরো বিশ্বই প্রতিরোধ করছে। নিশ্চিতভাবেই এটা উঠে দাঁড়ানোর সময়। যেখানেই থাকুন, যে ধরনের হুমকির মুখেই পড়ুন না কেন, আপনার উপস্থিতি জানান দেওয়ার এখনই সময়। গাজার মানুষ ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের ওপর নির্ভর করছে। বিশ্বনেতারা অনেক আগেই নিজেদের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”

বৈশ্বিক উদ্যোগে শত শত কর্মীর অংশগ্রহণ

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আসলে সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার এক বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। ৪৬টি দেশের ৪৪টি নৌযান ও প্রায় ৫০০ জন অধিকারকর্মী এই অভিযানে যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের নাগরিক ছাড়াও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিক রয়েছেন।

শহিদুল আলমের উপস্থিতি এই ফ্লোটিলাকে শুধু প্রতিরোধের নয়, বরং মানবিক ন্যায়ের প্রতীক হিসেবেও বিশ্বদৃষ্টি কাড়ছে। গাজায় অবরোধ ভাঙার এই অভিযানের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত হলেও, তার আহ্বান বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের নতুন স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দিয়েছে।

news