জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দর হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার রাতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কারণ—আকাশে অজ্ঞাত এক ড্রোনের উপস্থিতি। স্থানীয় সময় রাত ১০টার কিছু পর শুরু হওয়া এ ঘটনায় মোট ১৭টি ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়, আর এতে ভোগান্তিতে পড়েন প্রায় ৩,০০০ যাত্রী।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, শুধু তাই নয়, অন্তত ১৫টি ফ্লাইটকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়। এগুলো জার্মানির স্টুটগার্ট, নুরেমবার্গ, ফ্রাঙ্কফুর্ট ছাড়াও প্রতিবেশী অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অবতরণ করেছে।
যাত্রীদের ভোগান্তি আর রাতভর অপেক্ষা
মিউনিখ বিমানবন্দরের একজন কল হ্যান্ডলার সিএনএনকে জানান, “কিছু ফ্লাইট এখনও অপেক্ষমাণ, আবার কিছু বাতিল হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভোর ৫টার মধ্যেই বিমানবন্দর পুনরায় চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশে অবস্থিত মিউনিখ বিমানবন্দর হলো জার্মান পতাকাবাহী সংস্থা লুফথানসার একটি প্রধান কেন্দ্র। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে এখান দিয়ে প্রায় ২ কোটি যাত্রী ভ্রমণ করেছেন।
ইউরোপজুড়ে ড্রোন আতঙ্ক
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে সম্প্রতি ড্রোন দেখা যাওয়ার পর একের পর এক বিমানবন্দর বন্ধ হচ্ছে। গত সপ্তাহে ডেনমার্কে ড্রোন আতঙ্কে হাজার হাজার যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হন। এমনকি কোপেনহেগেনে ইউরোপীয় নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন সামনে রেখে ডেনমার্ক আকাশসীমায় সব ধরনের বেসামরিক ড্রোন উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করেছে।
এদিকে পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার ন্যাটো আকাশসীমায় রাশিয়ান ড্রোন প্রবেশ এবং এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে ইউরোপজুড়ে সতর্কতা জারি রয়েছে।
রাশিয়াকে দায়ী করছে ইউরোপ
ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন মন্তব্য করেছেন, যদিও ডেনমার্কে ড্রোন উড্ডয়নের পেছনে কে ছিল তা নিশ্চিত নয়, তবে ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি এক দেশই—আর তা হলো রাশিয়া।
তবে ক্রেমলিন ড্রোন দেখার ঘটনা এবং এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ উভয়ই অস্বীকার করেছে।
ঐতিহাসিক শহর মিউনিখের জনসংখ্যা ১০ লাখের বেশি। সপ্তাহের শুরুতেই বোমা হামলার হুমকির কারণে শহরের বিখ্যাত অক্টোবরফেস্ট বিয়ার উৎসব কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এরপর ড্রোন আতঙ্কে বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে শহরজুড়ে।


