এক রাতের মধ্যে রাশিয়ার তীব্র ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে অন্তত পাঁচজন নিহত এবং হাজারো মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন। এই তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। নিহতদের মধ্যে লভিভের লাপাইভকা গ্রামে একই পরিবারের চারজন এবং ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী রয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লভিভ, জাপোরিঝিয়া, ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক, চেরনিহিভ, সুমি, খারকিভ, খেরসন এবং ওডেসা অঞ্চলে একযোগে হামলা চালায় রাশিয়া।

জেলেনস্কি জানান, “রাশিয়া এক রাতেই ৫০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ৫০০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে।” অন্যদিকে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী দাবি করেছে, রাশিয়ার ৫৪৯টি হামলার মধ্যে ৪৭৮টি ধ্বংস করা হয়েছে।

লভিভের আঞ্চলিক প্রধান ম্যাকসিম কোজিটস্কি বলেন, ২০২২ সালের পর এটাই এ অঞ্চলে সবচেয়ে বড় আক্রমণ। হামলায় প্রায় ১৬৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শনাক্ত করা হয়েছে। হামলার কারণে লভিভে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায় এবং বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়।

জাপোরিঝিয়ার এক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আঘাতের পর ৭৩ হাজারের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েন। আঞ্চলিক গভর্নর ইভান ফেডোরভ জানান, হামলায় একজন নারী নিহত হয়েছেন এবং ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

হামলার পর ইউক্রেনের প্রতিবেশী পোল্যান্ড তার আকাশসীমা রক্ষায় যুদ্ধবিমান ও ন্যাটোর মিত্রবাহিনী মোতায়েন করেছে। পোলিশ অপারেশনাল কমান্ড জানিয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা ও রাডার সিস্টেম সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের সামরিক ও অবকাঠামোগত স্থাপনায় সফল হামলা চালিয়েছে। তবে জেলেনস্কি বলেছেন, “এই আকাশ সন্ত্রাস প্রতিহত করতে আরও কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।”

রাশিয়ার এই হামলা এমন সময় এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে পাল্টা হামলার সমর্থন দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্কসহ প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে, যার মধ্যে ২০১৪ সালে সংযুক্ত করা ক্রিমিয়া অন্তর্ভুক্ত।

 

news