মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামরিক হুমকির কঠোর জবাব দিল নাইজেরিয়া সরকার। বলল, দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রেখে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়ায় মার্কিন সাহায্য স্বাগত। খবর আল জাজিরার।
গত শনিবার ট্রাম্প হুমকি দেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের হত্যা হচ্ছে। সরকার ঠেকাতে ব্যর্থ হলে ‘দ্রুত’ সামরিক পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘খ্রিস্টান হত্যার সুযোগ দিলে’ সব সাহায্য বন্ধ!
কয়েক ঘণ্টায় জবাব দেয় নাইজেরিয়া। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিমিবি ইমোমোটিমি এবিয়েনফা রোববার (২ নভেম্বর) আল জাজিরাকে বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আমরা গর্বিত নই। কিন্তু ‘শুধু খ্রিস্টানদের লক্ষ্য’ করা হচ্ছে – এটা সত্য নয়। নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টান গণহত্যা হচ্ছে না। হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, কিন্তু তা শুধু খ্রিস্টানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
                                                                           
                                                                    
                                    
সরকার হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগের জবাবে বলেন, এগুলো সরকারের অনুমোদনে হচ্ছে না। সরকার এর তীব্র বিরোধী। যেকোনো নাইজেরীয়কে হত্যা দেশের জন্য ক্ষতি। অভিযুক্তরা বোকো হারাম, আল-কায়েদা ও আইএস সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
সন্ত্রাস দমনে মার্কিন সাহায্য স্বাগত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবুর উপদেষ্টা ডানিয়েল বোয়ালা বলেন, ‘ভূখণ্ডের অখণ্ডতা সম্মান করলে সাহায্য নেব। দুই নেতা বসে আলোচনা করলে সন্ত্রাসবিরোধী লড়ায় সাফল্য মিলবে।’
                                                                           
                                                                    
                                    
প্রেসিডেন্ট টিনুবু ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। বিবৃতিতে বলেন, ২০২৩ থেকে খ্রিস্টান-মুসলিম নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা যোগাযোগ রেখেছি। ধর্ম-অঞ্চলের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। নাইজেরিয়াকে অসহিষ্ণু বলা জাতীয় বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না, সরকারের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার প্রচেষ্টাকেও অস্বীকার করে।
নাইজেরিয়ায় ২০০+ জাতিগোষ্ঠী। উত্তর মুসলিমপ্রধান, দক্ষিণ খ্রিস্টানপ্রধান। বোকো হারাম-আইএস উত্তর-পূর্বে ১৫+ বছর ধরে ত্রাস চালাচ্ছে, হাজারো মানুষ নিহত। বিশ্লেষকরা বলেন, খ্রিস্টান নিহত হলেও অধিকাংশ ভুক্তভোগী মুসলিম। মধ্যাঞ্চলে রাখাল-কৃষকের জমি-পানির সংঘর্ষ নিত্যঘটনা। উত্তর-পশ্চিমে ডাকাতচক্র অপহরণ-মুক্তিপণ করে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এসিএলইডি’র বিশ্লেষক ল্যাড সেরওয়াত বলেন, বোকো হারাম-আইএসআইএল খ্রিস্টানবিরোধী সুর ব্যবহার করে, কিন্তু নির্বিচার হামলা চালায়। এ বছর ১,৯২৩ বেসামরিক হামলায় ধর্মীয় কারণে খ্রিস্টান লক্ষ্যবস্তু মাত্র ৫০টি।
ট্রাম্প প্রশাসন নাইজেরিয়াকে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনকারী’ তালিকায় রেখেছে – চীন, মিয়ানমার, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, পাকিস্তানের সঙ্গে। টিনুবু অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। মুসলিম হয়েও খ্রিস্টানকে বিয়ে করেছেন, সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে খ্রিস্টান নিয়োগ দিয়েছেন।
                                                                            
                                                                           
                                                                    
                                    
                                
                                
	
                                
                    
                                                                                    