যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা সরকারি অচলাবস্থার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হয়েছে, যা সরকারে শাটডাউন বা বন্ধ পরিস্থিতি শেষ করবে। এর আগে বিলটি সিনেটেও পাস হয়। এখন শুধু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের অপেক্ষা।

এতে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ সরকারি শাটডাউনের ইতি ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ২২২ জন আইনপ্রণেতা বিলের পক্ষে ভোট দেন। এর মধ্যে ছয়জন ডেমোক্র্যাটও ছিলেন। অন্যদিকে, ২০৯ জন ভোট দেন এর বিপক্ষে—যাদের মধ্যে দুজন রিপাবলিকানও রয়েছেন।

গত ১ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি ব্যয়সংক্রান্ত বিল অনুমোদন না হওয়ায় সরকার আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে।
ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দল ও বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের তীব্র রাজনৈতিক বিরোধের কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ফলে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার সরকারি কর্মীর বেতন বন্ধ হয়ে যায়। আরও প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মী বেতন ছাড়াই বাধ্য হন ছুটিতে যেতে। কেউ কেউ বেকার হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন, বন্ধ হয়ে যায় বহু ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রম।

অবশেষে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর গত ১০ নভেম্বর (সোমবার) রাতে সিনেটে ৬০-৪০ ভোটে বিলটি অনুমোদিত হয়।
বিলটি আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের অর্থায়ন নিশ্চিত করবে। এর মানে, ছয় সপ্তাহ ধরে বেতনহীন থাকা সাত লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারী অবশেষে আবার বেতন পেতে যাচ্ছেন।


সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কিন অধ্যয়ন কেন্দ্রের সহযোগী অধ্যাপক ডেভিড স্মিথ এ বিষয়ে বলেছেন,

“এটি আপাতত একটি অস্থায়ী সমাধান। জানুয়ারিতে যদি নতুন চুক্তি না হয়, তাহলে আবারও সরকার বন্ধ হয়ে যেতে পারে।”

অর্থাৎ, আপাতত শাটডাউন থেকে মুক্তি মিললেও, রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে আবারও অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে।


এই বিল পাসের মাধ্যমে সাময়িকভাবে স্বস্তি ফিরছে মার্কিন জনগণের জীবনে। কিন্তু মূল সমস্যা—রাজনৈতিক বিভাজন ও বাজেট বরাদ্দ নিয়ে মতপার্থক্য—সমাধান না হলে, একই সংকট আবারও ফিরে আসতে পারে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই।

 

news