মেক্সিকো সিটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক সহিংসতায়। শনিবার রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১২০ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১০০ জনই পুলিশ সদস্য বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

সহিংসতার মাঝেও হাজারো মানুষ রাস্তায় নামেন। তারা দেশের বাড়তে থাকা হত্যাকাণ্ড, সহিংস অপরাধ এবং প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবমের নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানান। একই দিনে মেক্সিকোর আরও কয়েকটি শহরেও এই ধরনের বিক্ষোভ হয়।

বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সাম্প্রতিক আলোচিত হত্যাকাণ্ডগুলো—বিশেষ করে উরুয়াপানের মেয়র কার্লোস মানজোর মৃত্যু। মাদক-কার্টেল দমনে কঠোর অবস্থানের জন্য পরিচিত মানজোকে ১ নভেম্বর ‘ডে অব দ্য ডেড’ উৎসব চলাকালীন গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে ক্ষোভ বাড়ছিল।

‘উই আর অল কার্লোস মানজো’—এই স্লোগান লিখে অনেক বিক্ষোভকারী ব্যানার হাতে মিছিল করেন। কেউ কেউ নিহত মেয়রের প্রতি সম্মান জানাতে কাউবয় হ্যাট পরে বিক্ষোভে যোগ দেন।

বিক্ষোভকারীরা জাতীয় প্রাসাদের সামনে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মেক্সিকো সিটির নিরাপত্তা প্রধান পাবলো ভাজকেজ জানান, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিক্ষোভ শুরু হওয়ার আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট শেইনবম দাবি করেন, তার সরকারের বিরুদ্ধে যেসব আন্দোলন হচ্ছে, সেগুলো ডানপন্থি রাজনৈতিক শক্তির অর্থায়নে সংগঠিত।
তিনি বলেন, “যুবকদের দাবি থাকতেই পারে, কিন্তু জনগণকে জানতে হবে—এই বিক্ষোভের পেছনে কারা আছে।”
তার অভিযোগ—বিক্ষোভ প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়ায় বট ব্যবহার করা হয়েছে।

ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরেই শেইনবমের জনপ্রিয়তা ৭০ শতাংশের উপরে। তার সরকার বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে ফেন্টানিল পাচার রোধে তারা উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে।

কিন্তু দেশজুড়ে সহিংসতা কমাতে ব্যর্থতার অভিযোগ বাড়ছে দিনের পর দিন। শুধু মেক্সিকোর ভেতরেই নয়—প্রতিবেশী পেরুও শেইনবম সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

কয়েক দিন আগেই পেরু ও মেক্সিকো একে অপরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। পেরুর অভিযোগ—২০২২ সালের অভ্যুত্থানচেষ্টায় অভিযুক্ত তাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দিয়েছে মেক্সিকো।

মেক্সিকোতে জেন-জি নেতৃত্বাধীন এই নতুন বিক্ষোভ তাই দেশীয় রাজনীতি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে—সব ক্ষেত্রেই বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

news