ম্যানচেষ্টারে ধর্ষক রেইনহার্ড সিনাগাকে ফেরত চায় ইন্দোনেশিয়া। যদি তাকে ফেরত দেয় তাহলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বৃটিশ নারী লিন্ডসে স্যান্ডিফোর্ডকে ফেরত দেবে দেশটি। এমন প্রস্তাবে হতাশা প্রকাশ করেছেন বৃটিশ কূটনীতিকরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়, ১৩ বছর মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে সময় কাটানোর পর ৬৯ বছর বয়সী স্যান্ডিফোর্ডের মুক্তির মাত্র কয়েকদিন বাকি। এমন সময় এই দাবিতে আলোচনায় ধাক্কা লাগে। ফলে তার দেশে ফেরত যাওয়া আট মাস বিলম্বিত হয়। শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহান্তে তিনি বৃটেনে ফিরতে সক্ষম হন। বৃটেন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়- স্যান্ডিফোর্ডের মুক্তি নিঃশর্ত হবে এবং এই অদলবদল তারা কখনোই মেনে নেবে না।

কারণ এটা হলে ১৩৬ জন পুরুষকে ধর্ষণ করা দানব রেইনহার্ড সিনাগা পাঁচ বছরের মধ্যেই মুক্ত হয়ে যেতে পারত। ৪২ বছর বয়সী সিনাগার বাবা ইন্দোনেশিয়ার ধনী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও সাবেক ব্যাংকার। একটি পিএইচডি ছাত্রবৃত্তি নিয়ে বৃটেনে ছিলেন সিনাগা।

 তিনি ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ম্যানচেস্টারের ক্লাব থেকে বের হওয়া তরুণদের টার্গেট করতেন। নিজের ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে তাদের মাদক খাইয়ে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করতেন এবং সব ভিডিও করতেন। একজন ১৮ বছরের রাগবি খেলোয়াড় হঠাৎ সজাগ হয়ে পাল্টা প্রতিরোধ করলে সিনাগা ধরা পড়ে। এরপর পুলিশ তার ফোনে ডজন ডজন ভিডিও পায়। অনেক ভুক্তভোগীই জানতেন না যে, তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন, যতক্ষণ না পুলিশ তাদের জানায়। ২০১৯ সালে সিনাগাকে ১৫৯টি যৌন অপরাধ, যার মধ্যে ১৩৬টি ধর্ষণ- এর দায়ে কমপক্ষে ৪০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।

স্যান্ডিফোর্ড ২০১২ সালে ১.৬ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের কোকেন পাচারের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছিলেন। এ বছরের মার্চে প্রত্যার্পণ কার্যক্রমের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া হঠাৎ বলে বসে- না, আমরা শুধু তাকে যেতে দেব না। আমরা বন্দি বিনিময় চাই। স্যান্ডিফোর্ড বলেন, আমি তো সব জিনিসপত্র সহবন্দিদের দিয়ে দিয়েছিলাম। কোন ফ্লাইটে যাব তাও বলে দিয়েছিল। তারপর শেষ মুহূর্তে তারা বলে, আমরা বন্দি বিনিময় চাই। 

বৃটিশ কূটনীতিকরা হতবাক হয়ে যান। বৃটেন সঙ্গে সঙ্গে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। স্যান্ডিফোর্ড বলেন, সিনাগা কখনোই মুক্তি পাবে না। বৃটিশরা ক্ষুব্ধ হবে যদি তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তার বাবা-মা দীর্ঘদিন ধরেই সিনাগাকে ইন্দোনেশিয়ায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য লবিং করছেন, যাতে তিনি ‘সাজা সম্পূর্ণ’ করতে পারেন।

 

news