পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া  প্রদেশে গত সপ্তাহে দুটি পৃথক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে পাকিস্তানি তালেবানের ১৫ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। আজ  দেশটির সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, গত ১৫ ও ১৬ নভেম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ডেরা ইসমাইল খান জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী প্রথম গোয়েন্দা-তথ্যভিত্তিক অভিযান চালায়। এই অভিযানে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের টিটিপি শীর্ষ নেতা আলম মেহসুদ-সহ ১০ জন জঙ্গি নিহত হয়।

দ্বিতীয় অভিযানটি পরিচালিত হয় উত্তর ওয়াজিরিস্তানের দত্তাখেল এলাকায়, যেখানে আরও পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে আইএসপিআর নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এলাকায় আর কোনো ভারত-সমর্থিত খারেজি থাকলে তাকে নির্মূল করতে স্যানিটাইজেশন অভিযান চলছে।’

এখানে উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সামরিক ও সরকারি কর্তৃপক্ষ প্রায়ই টিটিপি বা পাকিস্তানি তালেবান জঙ্গিদের বোঝাতে ‘খাওয়ারিজ’ শব্দটি ব্যবহার করে। সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ হলো—ভারত সরকার টিটিপি এবং কেপি ও বালুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করে। যদিও এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে নয়া দিল্লি।

এই সফল অভিযানে ১৫ জঙ্গি নিহত হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশেষভাবে প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের এই মুহূর্তে পুরো জাতি পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে আছে।’

অন্যদিকে, ইসলামাবাদ আফগান সরকারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করে আসছে যে তারা টিটিপি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘দৃঢ় ও কার্যকর’ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পাকিস্তানের দাবি, এসব জঙ্গি আফগান ভূখণ্ড থেকেই তাদের দেশে হামলা চালাচ্ছে। তবে কাবুলের তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলছে, পাকিস্তানকে তার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংকট নিজস্বভাবে সমাধান করতে হবে।

উল্লেখ্য, কঠোর ইসলামি আইন চাপিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে টিটিপি পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ বেশ কিছু হামলা চালিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার জেরে ইসলামাবাদ ও কাবুলের সম্পর্ক এখন উত্তপ্ত। গত অক্টোবরে দুই দেশের মধ্যে প্রাণঘাতী সীমান্তসংঘর্ষে বহু হতাহতের পর গত মাসে দোহায় সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছিল দুই দেশ।

 

news