সুদানের আধাসামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) হঠাৎ করেই তিন মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ও সৌদি আরবের সাময়িক শান্তিচুক্তি এবং শান্তি আলোচনার প্রস্তাবের পরেই সোমবার তারা এই ঘোষণা দেয়।

আরএসএফ-এর প্রধান জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো এই দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনীকেও এই যুদ্ধবিরতিতে যোগ দিতে চাপ সৃষ্টি করে।

কিন্তু এই ঘোষণার পরই সুদানের সেনাবাহিনী সরাসরি শান্তিচুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বসে। সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, এই প্রস্তাব আসলে আরএসএফ-এর পক্ষেই বেশি সহানুভূতিশীল। তাঁর অভিযোগ, এই চুক্তি বিদ্রোহী বাহিনীকে তাদের দখলকৃত এলাকাগুলো ধরে রাখারই সুযোগ দেবে।

তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইসলামপন্থী প্রভাব থাকার যে অভিযোগ আছে, তাও পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

আরএসএফ ইদানীং আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। গত অক্টোবর মাসে তারা সুদানের গুরুত্বপূর্ণ শহর আল-ফাশার দখল নেওয়ার পর সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘের রিপোর্টে উঠে এসেছে। শুধু তাই নয়, গণহত্যার মতো গুরুতর অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে।

এই সংঘাতের মূল দুই নেতা – আরএসএফ প্রধান দাগালো এবং সেনাপ্রধান বুরহান – দুজনকেই ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

সুদানের বর্তমান এই ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। তখন এই দুই বাহিনী – দেশটির নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক আরএসএফ – একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে।, এই সংঘাতে ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আর এই যুদ্ধের কারণে সুদানে ইতিমধ্যেই ভয়াবহ খাদ্য সংকট আরও গুরুতর রূপ নিয়েছে, দেশটির বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি।

মোটকথা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শান্তি প্রস্তাব আর আরএসএফ-এর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা সত্ত্বেও, সুদানের সেনাবাহিনীর অসহযোগিতার কারণে শান্তি প্রক্রিয়া এখনও অনেক অনিশ্চিত। দেশটি একটি ভয়াবহ মানবিক সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আর তার মধ্যেই চলছে এই ক্ষমতার লড়াই।

news