সমুদ্রের গভীরে এখন দুই সুপারপাওয়ারের মহড়া চলছে – আমেরিকা আর চীন! চীনের সাবমেরিন বাহিনী যেভাবে দ্রুত বড় আর আধুনিক হচ্ছে, তাতে মার্কিন নৌবাহিনীর দীর্ঘদিনের রাজত্বে ঝড় উঠেছে।
শীতল যুদ্ধের পর থেকে আমেরিকা সমুদ্রতলে শত্রুর সাবমেরিন শিকার করার জন্য পাগলের মতো টাকা ঢেলেছে – পারমাণবিক আক্রমণ সাবমেরিন, সমুদ্রের নিচে সেন্সরের জাল, P-8 পোসেইডন বিমান, সবকিছু। কিন্তু গত ২০ বছরে চীন এতটা এগিয়ে গেছে যে এখন সত্যিকারের লড়াই শুরু হতে পারে।
আমেরিকার মূল শক্তি? ভার্জিনিয়া আর লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লাসের সাবমেরিন – প্রায় শব্দহীন, দ্রুত আর দারুণ সোনার সিস্টেম। এরা শত্রুর জলসীমায় ঢুকে সাবমেরিনের পিছু নিতে পারে, প্রয়োজনে টর্পেডো ছুঁড়ে শেষ করে দিতে পারে। উপরে আছে ডেস্ট্রয়ার-ফ্রিগেট আর আকাশে P-8A পোসেইডন – সোনোবয় ফেলে বিরাট এলাকা স্ক্যান করে। সমুদ্রের তলায় আছে SOSUS-এর আধুনিক ভার্সন – শব্দ শুনে হাজার মাইল দূরের সাবমেরিন ধরে ফেলে। এখন তো মানবহীন আন্ডারওয়াটার ড্রোন আর AI-এর সাহায্যও নিচ্ছে।
কিন্তু চীন কি বসে আছে? একদম না! চীনের নেভি (PLAN) এখনো আমেরিকার থেকে পিছিয়ে, কিন্তু গতি ভয়ঙ্কর। পারমাণবিক আর ডিজেল-ইলেকট্রিক দুই ধরনের সাবমেরিনই বানাচ্ছে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার – টাইপ ০৯৪ আর আসছে টাইপ ০৯৬ ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন। এরা পারমাণবিক বোমা বহন করতে পারে। উপকূলে AIP সিস্টেমের ডিজেল সাবমেরিন – যেখানে আমেরিকার শিকার করা কঠিন। চীনা সাবমেরিন এখনো একটু বেশি শব্দ করে, কিন্তু ব্যবধান কমছে।
যদি চীনা সাবমেরিনগুলো এমন নিঃশব্দ হয়ে যায় যে আমেরিকা ধরতেই পারে না, তাহলে কী হবে? আমেরিকার এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, লজিস্টিক জাহাজ – কিছুই নিরাপদ থাকবে না। দক্ষিণ চীন সাগর থেকে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর – সব জায়গায় চীন হুমকি দিতে পারবে।
এখনো আমেরিকা এগিয়ে, কিন্তু ফারাক কমছে। চীন যদি সমুদ্রতলে সমতা আনে, তাহলে পুরো খেলাই বদলে যাবে। তাই আমেরিকা এখন নতুন প্রজন্মের সাবমেরিন-শিকারী ড্রোন আর AI-তে আরও টাকা ঢালছে।
