রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তাদের প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ব্যাপী দীর্ঘ বৈঠক শেষে রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ থামানোর জন্য ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনো ধরনের আপস হয়নি।
ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ওই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং তার জামাই জ্যারেড কুশনার। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি শান্তি পরিকল্পনার খসড়া নিয়ে আলোচনা করেন।
বিকেলের পরে শুরু হওয়া আলোচনা স্থানীয় সময় মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ক্রেমলিনের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ। তিনি বলেন, "এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সমঝোতার পথ খুঁজে পাইনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।"
উশাকভ বৈঠকের কথোপকথনকে 'খুবই গঠনমূলক' বলে বর্ণনা করলেও জোর দিয়ে বলেন, ওয়াশিংটন ও মস্কো উভয়ের জন্যই এখনও করণীয় অনেক কাজ বাকি আছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা ২৮ দফার শান্তি পরিকল্পনার প্রথম খসড়াটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। সে সময় ইউক্রেন ও তাদের মিত্ররা বলেছিল, এটি রাশিয়ার স্বার্থের দিকে ঝুঁকে আছে। পরে একটি সংশোধিত খসড়া তৈরি করে ওয়াশিংটন। সেটি নিয়েই ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সাথে মার্কিন কর্মকর্তারা বসেন, এবং তারই ধারাবাহিকতায় এবার মস্কোতে আলোচনা হলো।
এই বৈঠকের আগে থেকেই ক্রেমলিন শান্তি পরিকল্পনার খসড়াটি নিয়ে নিন্দা জানিয়ে আসছিল। ভ্লাদিমির পুতিন একাধিকবার বলেছেন যে, এটি তার দেশের কাছে 'গ্রহণযোগ্য নয়'। রুশ প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্ররা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের এসব পরিবর্তনের মূল লক্ষ্যই হলো পুরো শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। তিনি সতর্ক করে বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের বন্দরগুলোতে আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়াবে।
রুশ প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের জবাবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, পুতিন আসলে যুদ্ধ থামাতে চান না, এখন এটা পরিষ্কার। এর আগে পুতিন বলেছিলেন, তারা শীতকালজুড়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত, এখন নতুন করে সমুদ্রবন্দর ঘিরে হুমকি দিচ্ছেন।
মস্কোতে এই বৈঠক চলার সময়ই আয়ারল্যান্ড সফরে ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, ইউক্রেনের এখন একটি 'সম্মানজনক শান্তি' প্রয়োজন।
