পার্সটুডে-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকৃত অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বাত ইয়ামের মেয়র সেফিকা বারোট সম্প্রতি এক জরুরি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন যে ইসরায়েলি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিষেবা (শাবাক) ইরানের গোয়েন্দা প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা বাড়ছে। মেয়র সতর্ক করে বলেছেন, "ইরানিরা বাত ইয়ামে পৌঁছেছে", যা ইহুদিবাদী কর্তৃপক্ষের মধ্যে তেহরানের প্রভাব এবং আতঙ্কের পরিচায়ক।
বারোট আরও উল্লেখ করেছেন, শাবাক সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এমন কয়েকটি ঘটনা রেকর্ড করেছে যেখানে ইরানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি দখলকৃত এলাকার নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এই নাগরিকদের মধ্যে ছিল সামরিক সংরক্ষিত, ছাত্র এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও। শাবাক দাবি করেছে, ইরানি পক্ষ লোকেদের আকৃষ্ট করতে লোভনীয় আর্থিক প্রস্তাব, তথ্য সংগ্রহের মিশন বা অন্যান্য সহজ দেখানো কার্যকলাপ ব্যবহার করেছে।
মেয়র বারোট বলেছেন, শহরের ডজন ডজন বাসিন্দা বর্তমানে ইরানি দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রাখে। ইরান সহজ কিন্তু কার্যকর উপায়ে—যেমন আর্থিক প্রলোভন এবং আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিকারক মিশন—ব্যবহার করে অধিকৃত অঞ্চলে সরাসরি যোগাযোগের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
এই ধরনের গোয়েন্দা অনুপ্রবেশ ইরানের নমনীয়তা এবং বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়। এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি না ব্যবহার করে, বরং লক্ষ্যবস্তু সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের কার্যকরভাবে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সংযোগ ইরানের বিস্তৃত প্রভাব এবং মানুষকে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা প্রমাণ করে।
বাত ইয়ামের মেয়রের স্বীকারোক্তি, যে কয়েক ডজন বাসিন্দা ইরানি দলগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত, এটি অধিকৃত অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুতর ফাঁক নির্দেশ করে। শুধু নিরাপত্তা নয়, এর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবও রয়েছে। ইহুদি কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি নিজেই ইরানের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধে ইরান তার গোয়েন্দা ও অপারেশনাল ক্ষমতা ব্যবহার করে ইহুদি শাসনকে অবাক করতে সক্ষম হয়েছিল। এই অভিযানের মধ্যে ছিল কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ, সম্মিলিত যুদ্ধ কৌশল এবং শাসনব্যবস্থার উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি। একই সময়ে ইরান সামরিক, গোয়েন্দা, মিডিয়া এবং মনস্তাত্ত্বিক সরঞ্জাম একসাথে ব্যবহার করেছে, যা ইহুদি শাসনের জন্য মোকাবেলা করা অসম্ভব করে তুলেছে।
অধিকৃত অঞ্চলে ইরানের এই গোয়েন্দা অনুপ্রবেশ কৌশলগত বিজয় হিসেবে ধরা হচ্ছে, যা ইহুদি শাসন ও তার পশ্চিমা মিত্রদের উপর ইরানের গোয়েন্দা শ্রেষ্ঠত্ব দেখায়। ১২ দিনের যুদ্ধ এবং পরবর্তী ঘটনাগুলো স্পষ্ট করে যে, ইরানের প্রভাব তেল আবিব এবং ইহুদিবাদী পশ্চিমা মিত্রদের হিসাবের বাইরে।
