১০ বছর ধরে পুলিশ-ইন্টারপোলের চোখে ধুলো দিয়ে পালাচ্ছিলেন। ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিসও ছিল তাঁর নামে। এশিয়ার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ বন্যপশু পাচারকারী ইয়াংচেন লাচুংপাকে অবশেষে ধরা হলো সিকিমের লাচুং থেকে! মধ্যপ্রদেশের টাইগার স্ট্রাইক ফোর্স (এসটিএফ) আর ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর (ডব্লিউসিসিবি) যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। সিকিম পুলিশ, এসএসবি আর বন দফতরের সাহায্য নিয়ে এই সাফল্য এসেছে।

ভারত-চীন সীমান্তের কাছাকাছি উত্তর সিকিমের লাচুং এলাকা থেকে তাঁকে হাতেনাতে ধরা হয়। গোপন খবর ছিল, বড় কোনো পাচারের জন্যই তিনি ফিরেছেন। সেই সূত্র ধরেই ফাঁদ পাতা হয় আর এবার আর পালাতে পারেননি।

সব শুরু ২০১৫ সালে। মধ্যপ্রদেশের সাতপুরা টাইগার রিজার্ভের কামতি রেঞ্জ থেকে বাঘের চামড়া, হাড়, নখ, প্যাঙ্গোলিনের আঁশ উদ্ধার হয়। সেই সূত্র ধরে ফাঁস হয় বিশাল এক পাচারচক্র। বাঘের হাড়-চামড়া-তেল আর প্যাঙ্গোলিনের আঁশ নেপাল-চীন-তিব্বতে পাচার হতো – যার বাজারদর কোটি কোটি টাকা।

প্রথমে ধরা পড়েন জয় তামাং। তার জবানবন্দি থেকে বেরিয়ে আসে লাচুংপার নাম – চক্রের মূল মাথা। তারপর ৩৬ জনের তালিকা বেরোয়। ২০২২ সালে নর্মদাপুরম আদালত ২২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। কিন্তু লাচুংপা ততদিনে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন। নেপাল, তিব্বত, চীন – এই তিন জায়গায় লুকিয়ে থাকতেন। ভারতে ঢোকার জন্য বেছে নিতেন দুর্গম পাহাড়ি পথ, যেখানে নজরদারি কম। বারবার পালিয়েছেন, কিন্তু এবার আর পারলেন না।

লাচুং আর গ্যাংটক থেকে শুরু হয়েছিল তাঁর পাচার সাম্রাজ্য। তারপর ছড়িয়ে পড়ে দিল্লি, শিলিগুড়ি, কলকাতা, কানপুর, হোসাঙ্গাবাদ হয়ে নেপাল-তিব্বত-ভুটান পর্যন্ত। অবশেষে ১০ বছরের লুকোচুরি খেলা শেষ!

 

news