নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পর তিনি ও তার স্ত্রী পোশাকি মেয়র বাসভবন 'গ্রেসি ম্যানশনে' চলে যাবেন। এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান দুটি কারণ হলো পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিউইয়র্কবাসীর জন্য সাশ্রয়ী জীবনযাপন কর্মসূচিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লেখেন, "আমার স্ত্রী রমা ও আমি জানুয়ারিতে গ্রেসি ম্যানশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" একইসাথে, তিনি অ্যাস্টোরিয়ার তার বর্তমান আবাসের প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে এই এলাকার প্রভাব সবসময় তার মধ্যে ও তার কাজে প্রতিফলিত হবে।

তিনি লেখেন, "আমরা এখানকার সবকিছু মিস করব—কখনো শেষ না হওয়া এডেনি চা, স্প্যানিশ, আরবি ও অন্যান্য ভাষায় প্রাণবন্ত আলাপচারিতা, ব্লকের ভেতর থেকে ভেসে আসা সামুদ্রিক খাবার ও শর্মার ঘ্রাণ।"

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও সমালোচনা
নির্বাচনী প্রচারণার সময় মামদানি সাশ্রয়ী জীবনযাপন এবং আবাসন খাতে স্থিতিশীলতা আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গত মাসে বড় ব্যবধানে মেয়র নির্বাচনে জয়ী হওয়া মামদানি শত বছরের মধ্যে নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে কম বয়সী এবং প্রথম মুসলিম মেয়র হতে যাচ্ছেন।

তবে, বর্তমানে ৩৪ বছর বয়সী মামদানি একটি সরকারি ভর্তুকিপ্রাপ্ত (বিসিএইচএস) ভবনে থাকেন, যা নিয়ে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা রয়েছে। অ্যাস্টোরিয়ায় তার এক শোবার ঘরের অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া মাসে প্রায় ২,৩০০ ডলার। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো সমালোচনা করে বলেছিলেন, মামদানি বছরে প্রায় ১,৪২,০০০ ডলার আয় করেন, তবুও সরকারি ভর্তুকির ফ্ল্যাটে থাকেন। এই অ্যাপার্টমেন্টে ভাড়ার সাথে গরম রাখা ও গরম পানির ব্যবস্থা রয়েছে, তবে নিজস্ব ওয়াশার বা ড্রায়ার নেই। ভবনে একটি কমিউনাল লন্ড্রি রুম এবং ১৯২৯ সালে নির্মিত লিফট রয়েছে, যা অ্যাস্টোরিয়ায় বিরল।

গ্রেসি ম্যানশনের বিলাসিতা
অন্যদিকে, মেয়রদের জন্য নির্ধারিত সরকারি বাসভবন 'গ্রেসি ম্যানশন' এক ভিন্ন জগৎ। এটি ইস্ট রিভারের দৃশ্য দেখা যায়, যেখানে রয়েছে ফায়ারপ্লেসসহ বড় বিনোদনকক্ষ, বসার ঘর, খাবার ঘর এবং সার্বক্ষণিক রান্নার লোক। নিরাপত্তার জন্য উঁচু বেড়া, ক্যামেরা ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কঠোর নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় সরকারি সমাবেশস্থল হিসেবে প্রায় সব মেয়রই শেষ পর্যন্ত গ্রেসি ম্যানশনকেই বেছে নেন।

 

news