যুদ্ধবিরতি সত্বেও সৌদি জোট তা মানছে না: রিয়াদের সরকার পরিষদ গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

ইয়েমেনে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার পর ২৬দিন পেরিয়ে গেলেও সেখানকার জনগণের দুঃখ দুর্দশা এতোটুকু কমেনি। গত ২ এপ্রিল যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
দু'পক্ষের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী স্থল, আকাশ ও নৌ পথে সব রকম সামরিক অভিযান বন্ধ থাকবে। সমঝোতা অনুযায়ী তেলবাহী ১৮টি জাহাজ ইয়েমেনের হুদাইদা বন্দরে ভিড়তে পরবে এবং সপ্তাহে দুটি বিমান সানা বিমান বন্দরে অবতরণ করতে পারবে। কিন্তু ২৬ দিন অতিক্রান্ত হলেও ইয়েমেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জোটের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে সৌদি আরব সানা বিমান বন্দরে বিমান অবতরণের অনুমতি দিচ্ছে না।

এ ছাড়া, হুদাইদা বন্দর এলাকাসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন এলাকায় সৌদি জোটের বোমা হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইয়েমেনের জাতীয় তেল কোম্পানির মুখপাত্র এসাম আল মোতাওয়াক্কেল কিছুদিন আগে বলেছেন, সৌদি  নেতৃত্বাধীন জোট সমুদ্র এলাকায় এখনো দস্যুবৃত্তি অব্যাহত রেখেছে এবং জাতিসংঘের অনুমতি সত্বেও তারা ইয়েমেনের তেলবাহী জাহাজ বন্দরে ভেড়ার সুযোগ দিচ্ছে না। ইয়েমেনের যোগাযোগ ও পরিবহন মন্ত্রী আমের আল মারানি বলেছেন, জাতিসংঘের তত্বাবধানে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা হলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর লক্ষণীয় বিষয়ে মধ্যে কেবলমাত্র ইয়েমেনের পলাতক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদি ও তার সরকারের পরিচালনা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ ৮ সদস্য পদত্যাগ করেছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সৌদি জোটের পক্ষ থেকে বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দেয়ার পেছনে সৌদি আরবের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে হুথি সমর্থিত আনসারুল্লাহ বিরোধী ফ্রন্টকে শক্তিশালী করা এবং আনসারুল্লাহকে নতুন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে কর্মব্যস্ত রাখা। বাস্তবতা হচ্ছে আনসারুল্লাহর নেতৃত্বে ইয়েমেনের বিভিন্ন গ্রুপের ব্যাপক প্রচেষ্টায় গত ৩০  মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত রিয়াদে আলোচনার পর দুই মাসের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট পরিষদ গঠন এবং এর প্রধান হিসেবে রাশেদ আল আলিমিকে নিযুক্ত করার যে প্রস্তাব সৌদির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল আনসারুল্লাহ তা মানেনি। এ কারণে দ্বিতীয় মাসের যুদ্ধবিরতি আদৌ টিকবে কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে এবং চলমান যুদ্ধবিরতির সুযোগে কেবল আনসারুল্লাহর বিরোধীরা সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে।

বার্তাসংস্থা আনাতোলি এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রমজান মাসে যুদ্ধ বিরতি এবং পলাতক প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদির পদত্যাগের পর পরিস্থিতিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু সরকার পরিষদ গঠনের সৌদি প্রস্তাব হুথি আনসারুল্লাহ প্রত্যাখ্যান করায় স্বল্প সময়ে শান্তি আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। ফলে যুদ্ধ অবসানেরও সম্ভাবনা কম।খবর পার্সটুডের /এনবিএস/২০২২/একে

news