অ্যাশেজ সিরিজ শুরুর আগেই অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে বেঁধেছে বড়সড় বিতর্ক। কিংবদন্তি সাবেক অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন— ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলির কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো ‘সাহস’ নেই!
এই মন্তব্য সামনে আসে যখন পার্থ টেস্টের জন্য ঘোষিত অস্ট্রেলিয়া দলে ৩০ বছরের নিচে মাত্র একজন ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে।
আগামী ২১ নভেম্বর পার্থে শুরু হবে মর্যাদাপূর্ণ অ্যাশেজ সিরিজ, যা চলবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। বুধবার (৫ নভেম্বর) ঘোষিত প্রথম টেস্টের দলে অভিজ্ঞদের ভিড়ে তরুণদের অভাব দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্টিভ ওয়াহ।
“বেইলির কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা নেই”
ওয়াহ বলেন, “জর্জ বেইলিকে এখন কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অতীতে তিনি দেখিয়েছেন, সবসময় তিনি সেই সাহস দেখাতে পারেন না। এবার অন্য নির্বাচকদের সঙ্গে মিলে তাঁকে সামনে আসতেই হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বোলাররা সবাই ত্রিশের ঘরে, ব্যাটাররাও বয়সে বড় হচ্ছে। এটা স্বাভাবিক, কিন্তু একসঙ্গে তিন-চারজন খেলোয়াড় অবসরে গেলে দলের মধ্যে বড় শূন্যতা তৈরি হয়। তাই ধীরে ধীরে ট্রানজিশন দরকার, একসাথে নয়।”
“দল বেছে নেওয়ার কাজ খেলোয়াড়দের নয়”
ওয়াহর মতে, দলের নির্বাচন হওয়া উচিত সম্পূর্ণভাবে নির্বাচকদের হাতে, খেলোয়াড়দের নয়।
তিনি বলেন, “আমি চাই নির্বাচকরাই দল গঠন করুন, খেলোয়াড়রা নয়। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু খেলোয়াড় নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড়ের নাম বলেছেন— এটা নির্বাচকদের কাজ, তাদের নয়।”
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ ওপেনার উসমান খাজা প্রস্তাব করেছিলেন, ম্যাট রেনশ এবং মার্নাস লাবুশেনকে ওপেনিংয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে নির্বাচক কমিটি বলেছে, রাজ্য দলের খেলোয়াড়রা সাধারণত তাদের সতীর্থদের পক্ষে কথা বলেন— এতে সিদ্ধান্তে কোনো প্রভাব পড়ে না।
উসমান খাজার নির্বাচনের পক্ষে জর্জ বেইলি
খাজার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ২৬ ইনিংসে মাত্র দুইটি ফিফটি পাওয়া সত্ত্বেও তাঁকে রাখা হয়েছে দলে। এ নিয়ে জর্জ বেইলি বলেন, “কেবল বয়সের জন্য কাউকে বাদ দেওয়া ঠিক নয়। যদি পারফর্ম করে, তবে সেটা-ই আসল মানদণ্ড।”
বেইলি আরও যোগ করেন, “আমরা প্রতিটি টেস্টকে গুরুত্ব দিয়ে দেখি। তরুণদের সুযোগ দিতে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলে ট্যুর করানো হচ্ছে, একদিনের ম্যাচে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা ধীরে ধীরে প্রস্তুত হতে পারে।”
অভিজ্ঞ বনাম নতুন রক্ত— দ্বিধায় অস্ট্রেলিয়া
দলের ১৫ সদস্যের মধ্যে প্রায় সবাই ত্রিশোর্ধ্ব। উসমান খাজা আগামী মাসেই ৩৯-এ পা দেবেন। জস হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক, স্কট বোল্যান্ড— সবার বয়স গ্রীষ্মের শেষে ৩৫ ছুঁইছুঁই। ফলে অভিজ্ঞতা আর তরুণ উদ্যমের ভারসাম্য রক্ষা করাই এখন নির্বাচকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
স্টিভ ওয়াহর তোপে নির্বাচক কমিটি আপাতত নীরব থাকলেও, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে অ্যাশেজের আগেই যে অস্থিরতা বাড়ছে— তা স্পষ্ট।
