১৯৯৬ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর দেশের পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবার সেই সময়কার দুর্নীতির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষ।

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্নীতির অভিযোগে কঠিন সময় পার করছে শ্রীলঙ্কা। গত বছর দুর্নীতিবিরোধী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সরকারও পরে বড় ধরনের দুর্নীতির জালে জড়িয়ে পড়ে।

এই প্রেক্ষাপটে, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে ঐতিহাসিক শিরোপা এনে দেওয়া সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার নামও উঠে এসেছে একটি দুর্নীতির মামলায়।

দুর্নীতির অভিযোগে অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি

শ্রীলঙ্কার দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী থাকার সময় তেল কেনার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির নিয়ম পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে রানাতুঙ্গার বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিয়মিত চুক্তির বদলে তিনি ও তার ভাইরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দামে স্পট পারচেজ করতেন।

একটি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনাটি আলোচিত ‘রানাতুঙ্গা ব্রাদার্স স্ক্যান্ডাল’-এর অংশ, যা নিয়ে বর্তমানে শ্রীলঙ্কা সরকার ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান চালাচ্ছে।

তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে

ঘটনার তদন্তকারী কমিশন কলম্বো ম্যাজিস্ট্রেট আসাঙ্গা বোদারাগামাকে জানায়, বর্তমানে অর্জুনা রানাতুঙ্গা দেশের বাইরে রয়েছেন। দেশে ফিরলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

সংবাদ সংস্থা এএফপির বরাতে আদালতে জানানো হয়,
“২৭টি তেল কেনাকাটার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি শ্রীলঙ্কান রুপি।”
২০১৭ সালে এসব চুক্তি হওয়ার সময় এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি।

আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন রানাতুঙ্গার এক ভাই

অর্জুনা রানাতুঙ্গার বড় ভাই ধাম্মিকা রানাতুঙ্গা, যিনি সে সময় রাষ্ট্রায়ত্ত সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন, তাকে গত মাসে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

তবে আদালত তাকে জামিন দিলেও দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কারণ, ধাম্মিকা রানাতুঙ্গার শ্রীলঙ্কা ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে।

আরেক ভাই প্রসন্ন রানাতুঙ্গা, সাবেক পর্যটনমন্ত্রী, এর আগেই বীমা জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার হন। তিনি ২০২২ সালে চাঁদাবাজির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন এবং বর্তমানে দুই বছরের স্থগিত কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

এখন পর্যন্ত রানাতুঙ্গা পরিবারের মধ্যে একমাত্র অর্জুনা রানাতুঙ্গাই গ্রেপ্তার বাকি। তাকেও যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তার বড় ভাই ধাম্মিকার মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত রয়েছে ১৩ মার্চ।

 

news