অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ট্র্যাভিস হেডের শতরানের মুহূর্তটা এল এক অদ্ভুত ঘটনার মধ্য দিয়ে। ৯৯ রানে থাকাকালে জোফ্রা আর্চারের একটি ডেলিভারিতে কাট খেলেন হেড, কিন্তু ইংল্যান্ডের ভাইস-ক্যাপ্টেন হ্যারি ব্রুক গালি অঞ্চলে সেই সহজ ক্যাচটা ড্রপ করে দেন। এরপরই জো রুটের বলে একটি বাউন্ডারিতে তিনি পূর্ণ করেন তার সেঞ্চুরি এবং তার প্রিয় অ্যাডিলেড ওভালের পিচেই বসে দেন একটি চুমু।
এই অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া পুরোপুরি প্রভাব বিস্তার করছে। পার্থের প্রথম টেস্টে তাদের অ্যাশেজ বিজয়ের নায়ক ছিলেন ট্র্যাভিস হেড। এরপর আহত উসমান খাওয়াজার পরিবর্তে ওপেনিংয়ে নেমে তিনি অস্ট্রেলিয়ার জন্য এক দৃঢ় বিকল্পে পরিণত হয়েছেন।
৯৯ রানে ক্যাচ ফস্কানোর পরও শতরান, জয় করলেন পিচের প্রেম
ট্র্যাভিস হেড এই অ্যাশেজে একের পর এক আগুন ছড়াচ্ছেন। জো রুটের ওভার হেডের একটি বলকে ছক্কার মতো মেরে তিনি তার এই সিরিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি সম্পন্ন করেন। তবে এই ইনিংসে তিনি একবার ক্যাচ হবার সুযোগ পেয়েও রক্ষা পেয়েছিলেন, আর সেটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে—যখন মাত্র একটি রান দূরে ছিল তার সেঞ্চুরি।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস মাঠের বাইরে থাকায়, ভাইস-ক্যাপ্টেন হ্যারি ব্রুক দলের ভার সাময়িকভাবে নিয়েছিলেন। গালি অঞ্চলে ফিল্ডিং করতে নেমে ব্রুক একটি ওয়াইড বল কাট করতে গিয়ে হেডের ক্যাচটা ড্রপ করে দেন।
এরপর হেড তার প্রিয় অ্যাডিলেডের সাথে প্রেমের সম্পর্কটাকেই আরও গভীর করলেন। এই মাঠে প্রথম ইনিংসে অ্যালেক্স ক্যারি এবং এখন দ্বিতীয় ইনিংসে হেড—দুই স্থানীয় বালকই শতরান করলেন। শতরান সম্পন্ন করেই হেড আনন্দে নতজানু হয়ে অ্যাডিলেডের পিচটিকে চুমু দেন।
ট্র্যাভিস হেডের অ্যাডিলেডে টানা চার টেস্টে চারটি সেঞ্চুরি
অ্যাডিলেড ওভাল ট্র্যাভিস হেডের জন্য এক স্মরণীয় মাঠ হয়ে উঠেছে। এখানে টানা চার টেস্ট ম্যাচে তিনি চারটি শতরান করেছেন। হেড বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলছিলেন, যেখানে উইল জ্যাক্স তার নিয়মিত লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস মাঠের বাইরে থাকায় হ্যারি ব্রুক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ইংল্যান্ডের একটি বোলারও কম ছিল, যার কারণে তাদের জো রুটকে বোলিংয়ে আনার প্রয়োজন হয়েছিল।
জ্যাক্স দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটসম্যান উসমান খাওয়াজাকে আউট করতে সক্ষম হন, যাকে প্রথম ইনিংসেও এই ইংলিশ স্পিনার আউট করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া তেমন ভালো শুরু করতে না পারলেও দ্রুতই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান অ্যালেক্স ক্যারি এবং ট্র্যাভিস হেডের মধ্যে একটি সম্ভাবনাময় জুটিও গড়ে ওঠে।
বেন স্টোকস ও জোফ্রা আর্চারের ঐতিহাসিক জুটি ইংল্যান্ডের আশা জাগিয়েছিল
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৬৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে প্রচণ্ড সংকটে পড়েছিল। এরপর মাঠে নামেন জোফ্রা আর্চার, যিনি বল হাতে পাঁচ উইকেট শিকারের পর ব্যাট হাতে দারুণ এক ভূমিকা রাখেন।
আর্চার তার টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতরান করেন। তিনি এবং অধিনায়ক স্টোকস নবম উইকেট জুটিতে ইংল্যান্ডের হয়ে অ্যাডিলেডে সর্বোচ্চ ১০৬ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপ গড়েন। তাদের এই জুটির কল্যাণে ইংল্যান্ডের রান ২৫০ ছাড়িয়ে যায়। অধিনায়ক এবং দলের ১০ নম্বর ব্যাটসম্যানের মধ্যে এই শতরানের জুটিটি ইংল্যান্ডের নিয়মিত ব্যাটসম্যানদের চেয়েও বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছিল।
