অ্যাশেজ সিরিজে শোচনীয় হার আর ব্যর্থতার পর এবার বিতর্কের নতুন মুখ ইংল্যান্ডের ক্রিকেট দল। দলের দুই তারকা বেন ডাকেট ও জ্যাকব বেটহেলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বেশ কয়েকটি ভিডিও ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। ভিডিওগুলোতে ডাকেটকে তার হোটেল রুমের পথ খুঁজতে হিমশিম খেতে দেখা গেছে, আর বেটহেলকে দেখা গেছে নাইটক্লাবে নাচতে ও ভেপিং করতে।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ডাকেট হোটেলের করিডোরে হেঁটে যাচ্ছেন কিন্তু তার রুম খুঁজে পাচ্ছেন না। পাশ থেকে কেউ তাকে জিজ্ঞেস করছেন, তাঁকে আবার ট্রেনিং ভেন্যুতে ক্যাব লাগবে কিনা। অন্যদিকে, বেশ কয়েকটি ক্লিপে বেটহেলকে দেখা গেছে ক্লাবে ভেপ করতে এবং এক অচেনা মানুষের সঙ্গে নাচতে। এই ভিডিওগুলো প্রশ্ন তুলেছে, অ্যাশেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের মধ্যেই দলের শৃঙ্খলা ও মনোযোগ কোথায়?

ইসিবি'র জবাব: 'তদন্ত চলছে'
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) বেন ডাকেটের সংশ্লিষ্ট ভিডিও সম্পর্কে সচেতন হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, বিষয়টি এখনো যাচাই করা হচ্ছে এবং এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়নি। ইসিবির একজন মুখপাত্র স্কাই স্পোর্টসকে বলেন, "আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কনটেন্ট সম্পর্কে জানি। আমরা আচরণ নিয়ে উচ্চ প্রত্যাশা রাখি, এটা মেনে নিই যে খেলোয়াড়রা প্রায়ই তীব্র পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকেন। তাদের আচরণ প্রত্যাশার চেয়ে কম হলে আমাদের প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া আছে। যাদের সহায়তা দরকার, তাদেরকেও আমরা সমর্থন দিই। সত্যতা যাচই না হওয়া পর্যন্ত আমরা আর মন্তব্য করব না।"

স্কাই স্পোর্টসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নুসাতে ইংল্যান্ড দলের সফরকালীন সময়ে সাংবাদিকরা খেয়াল করেন, বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় দীর্ঘ সময়—প্রায় ছয় দিন ধরে—মদ্যপানে সময় কাটিয়েছেন।

ব্যর্থতা ও তদন্তের মুখে দল
ইংল্যান্ডের পুরুষ দলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কি বলেছেন, নুসাতে দলের মধ্য সিরিজের বিরতির সময়কার ঘটনা নিয়ে তারা পর্যালোচনা করবেন। অ্যাশেজ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পরই এই মন্তব্য আসে। যদিও ইসিবি দাবি করে, চার দিনের সেই সফরটি ছুটি ছিল না। হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম এক বছর আগেই এই বিরতির পরিকল্পনা করেছিলেন, যাতে খেলোয়াড়রা রিচার্জ করতে পারেন। এই সময়ে কোনো ট্রেনিং সেশনের ব্যবস্থা ছিল না।

তবে মাঠে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্স ছিল নাজুক। তারা অ্যাশেজ হেরেছে মাত্র ১১ দিনের খেলায়। বেন ডাকেটের ব্যাটও চরমভাবে নিরাশ করেছে, তিনি মাত্র ১৬.১৬ গড়ে ৯৭ রান করেছেন, সর্বোচ্চ ছিল ২৯।

কীভাবে হেরেছে অ্যাশেজ?
ইংল্যান্ড প্রথম তিনটি টেস্টেই হেরে ১১ দিনের মধ্যে অ্যাশেজ হারায়। পার্থে শুরুতেই ভয়াবহ ব্যাটিং ধসে দুই দিনেরও কম সময়ে ৮ উইকেটে হারের শিকার হয় তারা। ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেডে তারা লড়াই করলেও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ক্যাচ ড্রপ, সুযোগ হাতছাড়া করার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়াকে জয় এনে দেয়। এখন অ্যাশেজ হারার পর, মেলবোর্ন ও সিডনিতে শেষ দুই টেস্টে মুখোমুখি হতে হবে তাদের।

 

news