পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসল) দ্রুত বড় এক পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে। আর এজন্য বিনিয়োগকারীদের সাড়া আশাতীত, এমনকি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কাছেও তা বিস্ময় জাগিয়েছে।
পিএসলের দল সংখ্যা ছয় থেকে আট করার এই পরিকল্পনা বিনিয়োগকারীদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। ইতোমধ্যেই নতুন দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য ১২টি গ্রুপ আনুষ্ঠানিক বিড জমা দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ: পিএসল সম্প্রসারণে ১২টি বিড
বিডিং-এর সময়সীমা ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। সেই অতিরিক্ত সময় ফলপ্রসূ হয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বিড পেয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউএই এবং পাকিস্তানের বিনিয়োগকারীরা দল কেনার জন্য জোরালো আগ্রহ দেখিয়েছেন। এতে স্পষ্ট যে, পিএসল এখন একটি বিশ্বস্ত ক্রীড়া বিনিয়োগের খাত হিসেবে নিজের অবস্থান শক্ত করেছে।
পড়ুন: [মোহসিন নকভির আইসিসিতে ভারতীয় খেলোয়াড়দের নামিয়ে দেয়ার হুমকি]
দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল ক্রিকেট বাজারের ভিত পেতে আগ্রহী আন্তর্জাতিক মূলধনের কাছে পাকিস্তানের এই টি২০ ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
এই জোরালো সাড়া প্রমাণ করে যে, পিসিবি’র সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তারা স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্বমানের পদ্ধতিতে এই বিক্রি প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে। দীর্ঘমেয়াদি স্পনসরশিপ ও ব্রডকাস্ট মূল্য নির্ধারণের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
পিসিবির প্রস্তুতি: পিএসল সম্প্রসারণ চূড়ান্ত পর্যায়ে
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড পুরো প্রক্রিয়াটি খুবই সতর্ক ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করছে। ২৭ ডিসেম্বর বোর্ড জানিয়ে দেবে কোন কোন বিডার প্রাথমিক পর্যায় অতিক্রম করেছে। কেবল প্রয়োজনীয় কারিগরি মানদণ্ড পূরণকারীরাই আগাতে পারবে।
চূড়ান্ত ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি পালিত হবে ৮ জানুয়ারি, ইসলামাবাদ কনভেনশন সেন্টারে। সেখানে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে নতুন দুটি দলের মালিক নির্বাচিত হবে। মজার বিষয় হলো, পিএসলের এই সম্প্রসারণ শুধু দল যোগ করার ব্যাপার নয়। পিসিবি লিগের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
কিভাবে এই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বিক্রি হয়, তা ভবিষ্যতে দলের মূল্য, টিভি স্বত্ব এবং দীর্ঘমেয়াদি স্পনসরশিপ চুক্তিকে প্রভাবিত করবে। সেজন্য বোর্ড প্রক্রিয়াটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ও পেশাদার রাখতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
পড়ুন: [পাকিস্তানের তারকা সমীর মিনহাসের বিরাট কেলেঙ্কারী]
আট দলের ফরম্যাট এখন ক্যালেন্ডারে নিশ্চিত। পরবর্তী আসরটি অনুষ্ঠিত হবে ২৬ মার্চ থেকে ৩ মে, ২০২৬ তারিখ পর্যন্ত। এটি হবে লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আসর। দল বেশি হলে ম্যাচও হবে বেশি, বাড়বে বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য পিএসলে খেলার সুযোগ ও আয়।
নতুন দলগুলো কোন কোন শহরে খেলবে?
ভক্তদের জন্য সবচেয়ে উৎসুকতার বিষয় নতুন দলগুলোর সম্ভাব্য 'হোম'। পিসিবি ইতোমধ্যে কিছু শহরের নামের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করেছে। সফল বিডারদেরকে এই তালিকা থেকে বেছে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে, যাতে তারা তাদের দলের ভবিষ্যৎ ভক্তগোষ্ঠী গড়ে তুলতে পারেন।
শর্টলিস্টে থাকা শহরগুলো হলো:
ফয়সালাবাদ
রাওয়ালপিন্ডি
হায়দ্রাবাদ
শিয়ালকোট
মুজাফফারাবাদ
গিলগিট
আর্থিক প্রভাব ও বাজারের আস্থা
এত বিপুলসংখ্যক বিড পিএসলের বাণিজ্যিক মূল্য কতটা বেড়েছে তার সবচেয়ে স্পষ্ট সংকেত। শোনা যাচ্ছে, এই পর্যায়ের আগ্রহ ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি আগের যেকোনো বিক্রির তুলনায় অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে পিসিবির হাতে আসবে বিপুল আর্থিক সম্পদ। আইপিএল এবং এসএ২০-এর মতো অন্য বড় টি২০ লিগের প্রবৃদ্ধির পথ অনুসরণ করেই পিএসলের এই সম্প্রসারণ।
