রাজধানীর মিরপুরে হেযবুত তওহীদেও উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষদের নিয়ে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার মিরপুর ১৩ নম্বরের ৪নং ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। এসময় হেযবুত তওহীদের এমাম পবিত্র মাহে রমজানের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সহ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও তিনি মুসলিম জাতির সোনালী যুগের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংকট নিরসনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহব্বান জানান।

হেযবুত তওহীদের মিরপুর থানা সভাপতি আব্দুল হক বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় আমির ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শফিকুল আলম উখবাহ, গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, আন্ত:ধর্মীয় যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন রাব্বানি প্রমুখ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, পবিত্র মাহে রমজান মাসে আমরা সকলেই সিয়াম সাধনা করি। এই রমজান আমাদেরকে ত্যাগ ও সাম্যের শিক্ষা দেয়। এই এক মাসের শিক্ষার প্রতিফলন আমাদেরকে বছরের বাকি সময়গুলোতেও করতে হবে। সমাজ থেকে সর্বপ্রকার অন্যায়-অবিচার দূর করতে আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে। নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে হবে মানবতার কল্যাণে।

তিনি আরও বলেন, আজকে যারা নিজেদেরকে ‘তওহীদী জনতা’ মনে করেন তাদের মধ্যে বিরাট সংখ্যা কেবল ব্যক্তিগত আমল করে যাচ্ছেন, কেউ ধর্মের নামে রাজনীতি করছেন, কেউ আন্দোলন সংগ্রাম করছেন রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য, কেউ জঙ্গিবাদের দিকে পা বাড়াচ্ছেন। কিন্তু তাদেকে বুঝতে হবে তারা আজ থেকে ১৩০০ বছর আগেই সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ছেড়ে প্রথমত রসুলের উম্মাহ থেকে বহিঃস্কৃত হয়েছেন, দ্বিতীয়ত চারশ বছর আগে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হয়ে আল্লাহর হুকুম অকার্যকর করে দিয়ে ব্রিটিশের হুকুম, বিধান চালু হবার পরে তওহীদ থেকেই বহির্গত হয়ে গেছেন।

হেযবুত তওহীদের এমাম বলেন, তারা নিজেরা এখন আল্লাহর রসুলের সুন্নাহ বাদ দিয়ে বিভিন্ন পীরের তরিকা গ্রহণ করেছেন, কেউ ধর্মভিত্তিক দলের অনুসারী হয়েছেন, কেউ পাশ্চাত্য ব্যবস্থার অনুসরণ করে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দলের কর্মী হয়েছেন। অন্যদিকে শিয়া-সুন্নি, হানাফি-হাম্বলি ইত্যাদি ফেরকা-মাজহাবে বিভক্ত হয়ে রসুলাল্লাহর ভবিষ্যদ্বাণী মোতাবেক বাহাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হয়েছেন। তারা আদর্শচ্যুত, লক্ষ্যচ্যুত হয়েছেন। এখন ফেরকাবাজি, দলবাজি নয়। আর বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্ন আয়াত তুলে এনে যার যার ইচ্ছামত প্রয়োগ করার কোনো অথরিটিই তাদের নেই। এখন একটাই কর্তব্য, তওহীদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সরকার জনগণ সবাই মিলে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া। তাহলে তাদের দেশ বাঁচবে, সমাজ বাচেবে, ঈমান বাচবে, ধর্ম বাচবে। এটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ইবাদত।

অনুষ্ঠানে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষের ব্যাপক সমাগম ঘটে। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় হলরুম। স্থানীয় সুধীবৃন্দ ও সামাজিক-রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এতে অংশগ্রহণ করেন। হেযবুত তওহীদের এমামের বক্তব্য শোনার পর ইফতার মাহফিলে ৩৩১ জন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হেযবুত তওহীদের সাথে কাজ করতে ঐক্যবদ্ধ হোন।  সবশেষে মোনাজাত ও উপস্থিতদের মধ্যে ইফতার বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।

news