বেকার যুবকদের চাকরি আর আয় বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশকে ১৫ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসেব করে এটা বাংলাদেশি টাকায় হয় প্রায় ১ হাজার ৮৩৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নারী আর জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা এলাকার নিম্ন আয়ের যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দিয়ে এই টাকা দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো একটা প্রেস রিলিজে এই খবর জানানো হয়। অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধার ও অগ্রগতি প্রকল্পের (RAISE) আওতায় এই ঋণ দেওয়া হবে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, এই প্রকল্প দিয়ে নতুন করে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার যুবকের চাকরি ও আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। এর আগে প্রকল্পটা থেকে ২ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ সুবিধা পেয়েছে। নতুন এই টাকায় অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা ট্রেনিং, শিক্ষানবিশ প্রোগ্রাম, উদ্যোক্তা ডেভেলপমেন্ট আর ক্ষুদ্রঋণের মতো নানা সাহায্য পাবে। এতে তরুণ আর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা চাকরি ও ব্যবসা বাড়ানোর বাধাগুলো পার করতে পারবে।

প্রকল্পের বড় একটা অংশ নারী ক্ষমতায়ন আর জলবায়ু সহনশীল জীবিকার দিকে ফোকাস করছে। এর মধ্যে আছে ভালো মানের আর সাশ্রয়ী শিশু যত্ন সেবা, পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা সামলানোর জন্য সম্প্রদায়ভিত্তিক জীবিকা সাহায্য।

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেছেন, ‘একটা ভালো চাকরি একটা জীবন, একটা পরিবার আর একটা সম্প্রদায়কে বদলে দিতে পারে। কিন্তু প্রতি বছর শ্রমবাজারে ঢোকা অনেক তরুণ বাংলাদেশি কাজ পায় না। চাকরির মান, দক্ষতার ঘাটতি আর দক্ষতার মিল না হওয়া বড় চ্যালেঞ্জ।’

তিনি আরও বলেন, এই নতুন টাকা বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক গ্রুপের তরুণদের বাজারের সঙ্গে মানানসই দক্ষতা ও ট্রেনিং পেতে সাহায্য করবে।

বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, অতিরিক্ত এই টাকায় প্রকল্পটা শহরের বাইরে গ্রামেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এতে প্রান্তিক যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা টার্গেটেড সাহায্য পাবে। পাশাপাশি নারীদের ট্রেনিং ও স্টার্টআপ গ্রান্ট দিয়ে ঘরভিত্তিক শিশু যত্ন সেবা শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে, যা নারীদের চাকরিতে যোগ দেওয়া বাড়াবে আর নতুন চাকরি তৈরি করবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সোশ্যাল প্রটেকশন ইকোনমিস্ট ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেছেন, ‘এই নতুন টাকায় প্রমাণিত উদ্যোগগুলো বাড়ানো, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো আর শিশু যত্নের মতো নতুন সমাধান চালু করা যাবে। এতে আরও বেশি তরুণ ও নারী নিজেদের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে।’

বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, প্রকল্পটা ইতিমধ্যে ভালো ফল দেখাচ্ছে। শিক্ষানবিশ প্রোগ্রাম শেষ করা অংশগ্রহণকারীদের ৮০ শতাংশের বেশি তিন মাসের মধ্যে চাকরি পেয়েছে। একই সঙ্গে তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আয় ও ব্যবসা চালানোয় উন্নতি দেখিয়েছেন।

 

news