অভিনেতা ও এমপিওভুক্ত শিক্ষক রাসেল মাস্টারের জীবনযাপন বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একদিকে তিনি পেশাগত সীমাবদ্ধতা, আর্থিক চাপ ও সমাজের অবহেলার কথা বলছেন, অন্যদিকে তার বিলাসবহুল ভ্রমণ, দামি খাবার এবং আরামদায়ক জীবনযাপনের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ্যে আসায় নেটিজেনরা তাকে 'মিথ্যা মায়াকান্নার' অভিযোগ করছেন।

সম্প্রতি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের সময় রাসেল মাস্টার বলেছিলেন, সরকারি বেতনভুক্ত শিক্ষক হিসেবে তার জীবনযাপন কঠিন, আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং পেশাগতভাবে অনেক কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি এই সামাজিক ও আর্থিক সমস্যার কথা প্রকাশ করে জনগণের সহানুভূতি লাভের চেষ্টা করেছিলেন।

কাঁদার পরই বিলাসী খাবার ও সিলেট ভ্রমণ!
কিন্তু তিনি যখন অভাবের কথা বলছেন, ঠিক তখনই তার ভ্রমণ এবং বিলাসী খাবারের ছবি প্রকাশিত হওয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। নেটিজেনরা লক্ষ্য করেছেন, তিনি নিয়মিত বুফে অথবা বিলাসী রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাবার খাচ্ছেন। এছাড়াও, সম্প্রতি সিলেটের মনোমুগ্ধকর সাদাপাথর এলাকায় ভ্রমণের ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরস্পরবিরোধী জীবনযাপন দেখে নেটিজেনদের মধ্যে ক্ষোভ ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

"ইলিশ মাছ খাওয়ার সামর্থ্য নেই" - বাস্তবে কী দেখা গেল?
অভিযোগ করা হচ্ছে, তিনি প্রকাশ্যে বলেন "ইলিশ মাছ খাওয়ার সামর্থ্য নেই" অথবা "ঘুরতে যাওয়ার সামর্থ্য নেই", অথচ বাস্তবে তার ব্যয়বহুল ভ্রমণ ও বিলাসী খাবারের ভিডিও ও ছবি প্রকাশিত হচ্ছে। নেটিজেনরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে তার এমন দ্বৈত জীবনযাপন কতটা নৈতিক এবং প্রমাণযোগ্য?

কিছু নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, "জনগণের সহানুভূতি পেতে কৃত্রিম মায়াকান্না দেখানো একজন শিক্ষকের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়। একজন শিক্ষকের উচিত সততা ও নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখা।" অন্যরা বলেছেন, "তিনি শিক্ষকতার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছেন, অথচ সমাজের সামনে নিজেকে কষ্টের প্রতীক বানিয়ে তুলেছেন। এ ধরনের আচরণ শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারানো।"

সরকারি বেতনভুক্ত শিক্ষক হিসেবে রাসেল মাস্টারের এই দ্বৈত জীবনযাপন এখন নৈতিকতার প্রশ্নে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একজন শিক্ষকের কাছে সাধারণ মানুষ একটি সৎ, নীতিনিষ্ঠ জীবনযাপনের প্রত্যাশা করে। সেই প্রত্যাশার সঙ্গে তার আচরণের পার্থক্যই আজ নেটিজেনদের ক্ষোভ ও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

 

news