তুরস্কের ইসরাইল-প্রেম গভীরতর হচ্ছে! ফিলিস্তিনের পক্ষে কথাগুলো কেবলই পরিহাস!

ফিলিস্তিন ও মুসলমানদের প্রথম কিবলার দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের গভীর বন্ধুত্ব ও সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।

ইসরাইল তুরস্কের প্রতি খুব একটা অনুরাগ না দেখালেও এরদোগানের কথিত ইসলামপন্থী দলই আগ বেড়ে ইসরাইলের প্রতি গভীর অনুরাগ দেখাচ্ছে। এর প্রমাণ হল ইসরাইল ইউরোপে গ্যাস সরবরাহর বিষয়ে তুরস্ককে কোনো অগ্রাধিকার বা ছাড় দেবে না বলে ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও এরদোগান সরকার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার একতরফা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইল তুরস্কের শত্রু দক্ষিণ সাইপ্রাসের সঙ্গে ৫ দিনের যৌথ সামরিক মহড়াও চালিয়েছে।

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৌলুদ চাভুস উগলু সম্প্রতি ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের স্তর দূতাবাস পর্যায়ে উন্নত করার কাজ শুরু করেছে আঙ্কারা। তুরস্ক তার মাটিকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলায় ব্যবহারের সুযোগ দেবে না এবং আঙ্কারা  নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিষয়ে ইসরাইলের সঙ্গে সহযোগিতা যত বেশি সম্ভব গভীর করতে প্রস্তুত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর আগেও জ্বালানী, বাণিজ্য, পুঁজি-বিনিয়োগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি এবং খাদ্য-নিরাপত্তা খাতে ইসরাইলের সঙ্গে তার দেশের সহযোগিতা জোরদারের কথা বলেছেন।

তুরস্ক এমন সময় ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার কথা বলছে যখন এরদোগান সরকারের কর্মকর্তারা মজলুম ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের সমর্থন থাকার দাবি করে আসছেন! অথচ বাস্তবে তুর্কি সরকার দেশটিতে ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দল হামাসের দপ্তর বন্ধ করার পাশাপাশি তুরস্ক থেকে ফিলিস্তিনি জনগণ ও সরকারের প্রতিনিধিদেরও বের করে দিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় তুরস্কের এরদোগানের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দল দলীয় স্বার্থের টানে যে কোনো সময় নীতি বদলে ফেলতে অভ্যস্ত।

ফিলিস্তিন প্রশ্নে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি এবং মুসলিম জাতিগুলোর পর্যায়ে এরদোগান সরকারের দরদ-মাখানো নানা বক্তব্য কেবলই লোক-দেখানো পদক্ষেপ ও ইসলামপন্থীদের সাময়িক বাহবা কুড়ানোর প্রচেষ্টা মাত্র। এরদোগান সরকারসহ কোনো কোনো মুসলিম ও আরব সরকারের স্বার্থান্ধ ও ইসরাইল-বান্ধব নীতির কারণেই সন্ত্রাসী ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী নিরস্ত্র ও অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও বায়তুল মুকাদ্দাসের ইহুদিকরণের চেষ্টাসহ মানবতা-বিরোধী নানা অপরাধ অব্যাহত রেখেছে।

২০১০ সালে গাজামুখী 'মাভি মারমারা' নামক ত্রাণবাহী জাহাজের নয় তুর্কি কর্মী ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে শহীদ হওয়া সত্ত্বেও এরদোগান সরকার ওই ঘটনার ক্ষতিপূরণ আদায়ে সক্ষম হয়নি এবং ইসরাইল বিষয়টিকে আত্মরক্ষার একটি ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। ওই ঘটনার প্রেক্ষাপটে এরদোগান সরকার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা পত্র-পত্রিকায় বা সংবাদ মাধ্যমে ঘোষণা করলেও বাস্তবে আঙ্কারা  ও তেলআবিবের সম্পর্ক ছিন্ন তো হয়ইনি বরং ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের সামরিক ও গোয়েন্দা সহযোগিতা সে সময়ও অব্যাহত থাকার নানা খবর সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ফাঁস হয়েছে।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news