ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত এখন মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে চাপের মুখে ইসরায়েল, অন্যদিকে ইরান তাদের অবস্থানে অনড়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এই সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

ইসরায়েল প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ডলার যুদ্ধব্যয় বহন করছে। শুধুমাত্র প্রথম দুই দিনেই ১.৪৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। ‘আয়রন ডোম’ ও ‘ডেভিড’স স্লিং’-এর মতো উচ্চপ্রযুক্তির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখতে বিশাল অর্থের প্রয়োজন, যা দেশটির অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো—বিদ্যুৎকেন্দ্র, গ্যাস স্টোরেজ, হাসপাতাল—ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরোকা মেডিকেল সেন্টারে শতাধিক আহতের চিকিৎসা চলছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সমুদ্র ও বিমানবন্দরের কার্যক্রম কমে যাওয়ায় বাণিজ্যিক ক্ষতি বাড়ছে, বিমার খরচ তিনগুণ বেড়েছে।

যুদ্ধের প্রভাবে ইসরায়েলের সাধারণ জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, বিমান চলাচল ব্যাহত। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বাজেট কাটছাঁটের ফলে সামাজিক অস্থিরতা বাড়তে পারে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। জাতিসংঘ ও মুসলিম দেশগুলোর সমালোচনা বাড়ছে। অন্যদিকে, ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা এখনও পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করেনি। বিশ্লেষকদের মতে, সংঘাত বাড়লে ইরান আরও শক্তিশালী প্রতিশোধ নিতে পারে, যা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।

এই সংকটের সমাধান না হলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠতে পারে, যা বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ।

news