জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে উপেক্ষা করে গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। একদিনেই অন্তত ৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা আগের দিনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

বুধবার রাতে গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলির উপর বোমাবর্ষণ করা হয়। একটি স্টেডিয়ামে গড়ে তোলা অস্থায়ী আশ্রয়স্থল মুহূর্তেই রক্তাক্ত গণকবরে পরিণত হয়। ওই হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত, যাদের মধ্যে ছিলেন সাতজন নারী ও দুই শিশু।

“আমাদের আর কিছুই নেই। শুধু ভয় নিয়ে বেঁচে আছি,” গাজার এক বাস্তুচ্যুত নারী নাজওয়া আল জাজিরাকে বলেন। তিনি জানান, পরিবহন খরচ এত বেশি যে নিজের জিনিসপত্র পর্যন্ত সঙ্গে আনা সম্ভব হয়নি।

জাতিসংঘ সতর্ক করে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা “গাজা শহরের জনগণের মধ্যে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে এবং হাজারো মানুষকে পালাতে বাধ্য করছে।” অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান ইয়াল জামির দাবি করেছেন, ফিলিস্তিনিদের নাকি “তাদের নিরাপত্তার জন্য” দক্ষিণ দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন জানাচ্ছে, এই যুক্তি মিথ্যা। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের আসল লক্ষ্য হচ্ছে গাজায় স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলের ভেতরে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করা

জামির আরও দাবি করেন, “গাজার বেশিরভাগ মানুষ ইতিমধ্যেই শহর ছেড়ে গেছে। সেনাবাহিনী নিয়মতান্ত্রিকভাবে গাজা শহরে অগ্রসর হতে থাকবে।”

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, আহত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার। আরও হাজারো মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবরে হামাসের নেতৃত্বে এক আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দী করা হয়। তাদের মধ্যে এখনও ৪০ জনেরও বেশি গাজায় আটক রয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই ইসরায়েল “প্রতিশোধের যুদ্ধ” শুরু করে, যা দিন দিন রক্তাক্ত গণহত্যায় রূপ নিচ্ছে।

news