প্রায় দুই বছরের রক্তক্ষয়ী গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে শান্তি পরিকল্পনা দিয়েছেন, তাতে আংশিকভাবে সম্মতি জানিয়েছে হামাস। এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে একে “ঐতিহাসিক পদক্ষেপ” আখ্যা দিয়েছেন বিশ্বনেতারা।
শুক্রবার হামাসের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পর বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক মহলে আশার সঞ্চার হয়েছে। ট্রাম্প নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, “হামাস টেকসই শান্তির জন্য প্রস্তুত বলেই মনে হচ্ছে। জিম্মিদের দ্রুত মুক্তির জন্য ইসরায়েলকে অবিলম্বে বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে।” তিনি আরো জোর দিয়ে বলেন, এটি শুধু গাজা নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শান্তির সূচনা হতে পারে।
এরদোগানের প্রশংসা
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান হামাসের এই সিদ্ধান্তকে ‘গঠনমূলক’ উল্লেখ করে বলেছেন, এটি স্থায়ী শান্তির পথে একটি বড় পদক্ষেপ। একইসঙ্গে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সাড়া জরুরি যুদ্ধবিরতি, মানবিক সাহায্যের প্রবাহ এবং স্থায়ী সমাধানের পথ খুলে দেবে।
কাতারের সমর্থন
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ট্রাম্পের প্রস্তাবকে হামাসের অনুমোদনকে স্বাগত জানায়। দোহা জানিয়েছে, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় তারা মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় চালিয়ে যাবে। বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে হামাসের অবস্থানকেও প্রশংসা করেছে কাতার।
মিশরের প্রতিক্রিয়া
মিশর এই ঘটনাকে “ইতিবাচক অগ্রগতি” বলে উল্লেখ করেছে। তারা জানায়, সব ফিলিস্তিনি দলের লক্ষ্য হলো রক্তপাত এড়ানো। কায়রো ঘোষণা দিয়েছে, আরব রাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে মিলে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করবে।
ইসরায়েলের অবস্থান
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, তারা ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে প্রস্তুত। এতে সব জিম্মির তাৎক্ষণিক মুক্তি নিশ্চিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে তারা।
জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস হামাসের বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, “গাজায় মর্মান্তিক সংঘাতের অবসান ঘটাতে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।”
ইউরোপের কণ্ঠ
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই পদক্ষেপকে “গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি” আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এখনই সময় যুদ্ধ থামিয়ে জিম্মিদের ঘরে ফেরানো ও ফিলিস্তিনিদের মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের ওপর জোর দেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় হামাসের সম্মতি গাজায় শান্তির “সেরা সুযোগ” তৈরি করেছে।
গাজার মানুষজনের প্রতিক্রিয়া
হামাসের ঘোষণার পর গাজার রাস্তায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। অনেকে পতাকা উড়িয়ে ও স্লোগান দিয়ে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। গাজার বাসিন্দাদের মতে, এটি প্রায় দুই বছরের রক্তপাত ও বোমাবর্ষণ বন্ধের প্রথম বাস্তবিক


