সুইডিশ পরিবেশ ও মানবাধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের বিস্ফোরক মন্তব্য— “গাজায় ইসরায়েল লাইভ-স্ট্রিমড গণহত্যা চালাচ্ছে, এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।” ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সোমবার গ্রিসে পৌঁছে এমন কঠোর ভাষায় ইসরায়েলের সমালোচনা করেন তিনি। খবর দিয়েছে সাবাহ নিউজ।
সম্প্রতি গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছাতে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে একটি অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন থুনবার্গসহ শতাধিক অধিকারকর্মী। ৪০টিরও বেশি নৌযানে ত্রাণ নিয়ে গাজা উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে গত বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনী ৪৭৯ জনকে আটক করে। তাদের মধ্য থেকে সোমবার ১৭১ জনকে, যার মধ্যে থুনবার্গও ছিলেন, ফেরত পাঠানো হয় গ্রিস ও স্লোভাকিয়ায়।
ইসরায়েলি বন্দিত্বের সময় থুনবার্গের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে— এমন অভিযোগও উঠেছে। এমনকি তাকে ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করা হয় বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে থুনবার্গ যখন এথেন্সের এলিফথেরিওস ভেনিজেলোস বিমানবন্দরে নামেন, তখন তার সমর্থকেরা ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা, মুখে ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান।
সেই মুহূর্তে জনতার উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে থুনবার্গ বলেন, “আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এখানে মুখ্য নয়। কারাগারে আমাদের সঙ্গে কীভাবে দুর্ব্যবহার হয়েছে, সেটা বলতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগবে। কিন্তু গল্পটা আসলে অন্য— আমাদের চোখের সামনে এখন গণহত্যা চলছে, সেটাও লাইভ সম্প্রচারিত হচ্ছে!”
তিনি আরও বলেন, “আজ কেউ বলতে পারবে না, তারা জানত না গাজায় কী ঘটছে। ভবিষ্যতেও কেউ অজুহাত দিতে পারবে না— ‘আমরা জানতাম না’। বিশ্ববাসী সব জানছে, সব দেখছে।”
থুনবার্গ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে বলেন, “তারা একটি পুরো জাতিকে মুছে ফেলতে চাইছে। গাজায় মানবিক সাহায্য আটকে রেখে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে, আর এটা নিছক কোনো যুদ্ধ নয়— এটা গণহত্যা।”
আবেগঘন কণ্ঠে থুনবার্গ বলেন, “আমি বুঝতে পারি না, মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে কীভাবে। লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে, যারা বছরের পর বছর অবরোধ ও নিপীড়নের মধ্যে বন্দি।”
সবশেষে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ইসরায়েল এই গণহত্যা থেকে কোনো দায়মুক্তি পেতে পারে না। পৃথিবী চুপ থাকলে এই অপরাধ ইতিহাস ক্ষমা করবে না।”


