নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লকর্নু, রাজনৈতিক অস্থিরতায় নড়বড়ে ইউরোপীয় শেয়ারবাজার।

ফ্রান্সে আবারও বড় রাজনৈতিক ধাক্কা। মাত্র ২৬ দিন আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া সেবাস্তিয়ান লকর্নু হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেছেন। এক বছরে এটি ফ্রান্সের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ—যা ইউরোপজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে।

আজ সোমবার এলিসি প্রাসাদ থেকে তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা আসে। সকালে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে দেখা করতে প্রাসাদে যান লকর্নু এবং প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএমটিভি নিশ্চিত করে—ম্যাক্রন তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লকর্নুর পদত্যাগ ছিল সময়ের ব্যাপার। কারণ, গতকালই ঘোষিত তাঁর নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে ফরাসি পার্লামেন্টে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ—লকর্নু তাঁর পূর্বসূরি বাইরুর ভেঙে দেওয়া পুরনো মন্ত্রিসভাকেই প্রায় আগের মতো ফিরিয়ে এনেছেন। এতে অনেক দল নতুন মন্ত্রিসভাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করার হুমকি দেয়।

এর ফলেই রাজনৈতিক চাপ তীব্র আকার ধারণ করে এবং মাত্র একদিন পরেই লকর্নু সরে দাঁড়ান।

এই পদত্যাগের ধাক্কায় সোমবার ইউরোপীয় শেয়ারবাজারে বড় পতন দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীরা ফ্রান্সের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা নিয়ে শঙ্কিত। প্যারিস স্টক এক্সচেঞ্জসহ বেশ কিছু ইউরোপীয় বাজারে সূচক নেমে গেছে কয়েক শতাংশ পর্যন্ত।

গত বছরের জুলাই থেকে ফ্রান্সের রাজনীতিতে টানাপোড়েন চলছে। সর্বশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে কোনো দলই স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় দেশটির সরকার কার্যত অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এক বছরের মধ্যে তিন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ফ্রান্সের নেতৃত্বের দুর্বলতা ও শাসন কাঠামোর ভঙ্গুরতা স্পষ্ট করে দিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছেন, রাজনৈতিক এই অস্থিরতা না থামলে ইউরোপের অর্থনীতিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

 

news