গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কাতারের পক্ষ থেকেও এটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা এই পরিকল্পনার অনুমোদন দিতে পারে। ইতিমধ্যেই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে নেসেটে (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ট্রাম্প আগেই সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আলোচকেরা চূড়ান্ত চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছেছেন এবং চুক্তি সই হলে সেটার ঘোষণা দিতে তিনি মিসরে যাবেন।
চুক্তির শর্তে রয়েছে:
গাজায় যুদ্ধের অবসান,
ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার,
উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশ,
এবং বন্দি বিনিময়।
হামাস চুক্তির শর্ত পুরোপুরি মানাতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, সব জিম্মি দ্রুত ঘরে ফেরানো হবে।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন,
“আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে রাজি হয়েছে। খুব শিগগির সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনাদের নির্দিষ্ট সীমানায় প্রত্যাহার করবে।”
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা এবং জিম্মি মুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে হামাস ও ইসরায়েল একমত হয়েছেন। এতে ৪৮ জন জিম্মি মুক্তির আওতায় আসবে, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদেরও মুক্তি দেওয়া হবে।
চুক্তির পর ট্রাম্প টেলিফোনে কথা বলেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-র সঙ্গে। নেতানিয়াহুর দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আজকের দিন ইসরায়েলের জন্য একটি দারুণ দিন।”
গাজায় সংঘাত বন্ধে মিশরে গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছিল হামাস-ইসরায়েল পরোক্ষ আলোচনা। টানা তিনদিন পর বুধবার (৮ অক্টোবর) প্রথম ধাপ মানতে সম্মত হয় দুই পক্ষ।
ট্রাম্প বলেন,
“এই ‘ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন’ ঘটনা সম্ভব করার জন্য ধন্যবাদ কাতার, মিশর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের।”
হামাসও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, ত্রাণ প্রবেশ এবং বন্দি বিনিময় সংবলিত চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। তারা সকল পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে, শর্তগুলো সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করতে এবং ইসরায়েল যাতে বিলম্ব বা উপেক্ষা করতে না পারে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও নিশ্চিত করেছে, যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্বের সব শর্ত এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে চুক্তি হয়েছে। এটি যুদ্ধ বন্ধ, জিম্মি মুক্তি এবং ত্রাণ প্রবেশের পথ খুলে দিয়েছে।
এ চুক্তির মাধ্যমে গাজায় চলমান সংঘাতের অবসান এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার নতুন পথ উন্মুক্ত হলো। প্রথম ধাপের সফলতা নির্ধারণ করবে, মধ্যপ্রাচ্যে শক্তিশালী, টেকসই ও চিরস্থায়ী শান্তি কতটা সম্ভব।


