সৌদি আরবে প্রবাসী কর্মীদের জন্য আসছে ঐতিহাসিক পরিবর্তন। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিতর্কিত 'কাফালা' বা পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। আগামী বছরের প্রথম দিকেই এই ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হবে, যার সরাসরি সুফল পাবেন প্রায় ১০ লাখেরও বেশি বিদেশি worker।
কাফালা প্রথার বদলে চালু হবে সম্পূর্ণ নতুন একটি 'চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান' পদ্ধতি। এতে করে নিয়োগকর্তা এবং বিদেশি কর্মী—দুই পক্ষের সম্পর্কই এখন থেকে একটি স্পষ্ট আইনি কাঠামোর মধ্যে পরিচালিত হবে। সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় আগামী সপ্তাহেই এই নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে যাচ্ছে।
কী কী বদল আসছে?
বর্তমানে কাফালা ব্যবস্থায় একজন প্রবাসী কর্মীর ভিসা, থাকা-খাওয়া এবং চাকরির সব আইনী দায়িত্ব থাকে তার 'কাফিল' বা পৃষ্ঠপোষকের হাতে। নতুন ব্যবস্থায় এই নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই কেড়ে নেওয়া হবে কর্মীর হাতে।
কর্মীরা নিজেরাই এক্সিট-রিএন্ট্রি ভিসা নিতে পারবেন।
পাসপোর্টে ফাইনাল এক্সিট সিল করতে আর কাফিলের অনুমতির দরকার পড়বে না।
চাকরি পরিবর্তন করে নতুন কোনো কাজে যাওয়া যাবে স্বাধীনভাবে, শুধু চুক্তির শর্ত মেনে।
কেন এই পরিবর্তন?
এই বড় রদবদল সৌদি আরবের 'ভিশন ২০৩০' এর একটি বড় অংশ। এই ভিশনের আওতায় দেশটির আবাসন, বিনোদন খাতের পাশাপাশি প্রবাসীদের জীবনমান উন্নয়নেও জোর দেওয়া হচ্ছে।
আসল কথা হলো, ২০২০ সালের প্রথম দিকেই কাফালা প্রথা বাতিলের কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে তা পিছিয়ে যায়। এখন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে ২০১৯ সালে চালু হওয়া 'প্রিমিয়াম ইকামা' বা বিশেষ বসবাসের অনুমতির পরের ধাপ হিসেবে।
কাদের কী লাভ?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাফালা প্রথা বিলুপ্তির ফলে সৌদি আরবের job market আরও স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য হবে। এর ফলে বিদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিকরা সৌদি আরবে কাজ করতে বেশি আগ্রহী হবেন। পাশাপাশি, সৌদি তরুণরাও এখন চাকরির বাজারে বিদেশি workersদের সাথে ন্যায্য প্রতিযোগিতা করতে পারবেন।
মূল লক্ষ্য হলো, শ্রমবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের করা, চাকরির স্বাধীনতা বাড়ানো এবং কিছু অসাধু নিয়োগকর্তার যেকোনো ধরনের শোষণ বা মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা। সারাবিশ্বের কাছে সৌদি আরবকে একটি আধুনিক ও কর্মীবান্ধব country হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাই এই সংস্কারের পেছনের মূল উদ্দেশ্য।
