ভারতের গুজরাটের রাজকোটের একটি হাসপাতালে ঘটে গেল এক ভয়াবহ ঘটনা। হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের সিসিটিভি ক্যামেরার গোপন ফুটেজ চুরি হয়ে পর্নোগ্রাফি সাইটে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এর একমাত্র কারণ হলো—হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সময় যে ডিফল্ট পাসওয়ার্ড দেওয়া ছিল, সেটাই পরে পরিবর্তন করা হয়নি। এই ফাঁকেই হ্যাকাররা হাসপাতালের সিস্টেমে ঢুকে পড়ে।

কীভাবে ঘটেছিল এই ঘটনা?

হ্যাকারদের একটি চক্র গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোর ওপর নজর রাখছিল। তারা স্ত্রীরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন মহিলাদের ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয়। হ্যাকাররা এবার ধরা পড়েছে, কিন্তু ক্ষতি তখনই হয়ে গেছে।

শুধু একটি হাসপাতাল নয়, দেশজুড়ে নেটওয়ার্ক

এখানেই শেষ নয়। 'টাইমস অফ ইন্ডিয়া'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হ্যাকার চক্রটি শুধু রাজকোটের একটি হাসপাতাল নয়, সারা ভারতের প্রায় ৮০টি সিসিটিভির 'ড্যাশবোর্ড' হ্যাক করেছে! এর মধ্যে দিল্লি, পুণে, মুম্বাই, নাসিক, সুরাত ও আহমেদাবাদের বিভিন্ন স্থানও রয়েছে। শুধু হাসপাতাল নয়, তারা স্কুল, অফিস, সিনেমা হল, কারখানা এবং এমনকি অনেক বাড়ির ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজও চুরি করে বিক্রি করেছে।

টেলিগ্রামে বিক্রি হতো ফুটেজ

তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানান, চুরি করা ফুটেজগুলো টেলিগ্রাম অ্যাপের কিছু গ্রুপে বিক্রি করা হতো। কোনো ফুটেজ ৭০০ রুপিতে, আবার কোনোটি ৪০০০ রুপিতে বিক্রি হতো। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হলো, হ্যাকাররা গ্রেফতার হওয়ার পরেও গত জুন মাস পর্যন্ত টেলিগ্রাম গ্রুপে এই ফুটেজগুলো বিক্রি হচ্ছিল।

গ্রেফতারের দশ মাস পর যা জানা গেল

এই হ্যাকার দলটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ধরা পড়ে। গ্রেফতারের প্রায় দশ মাস পর তদন্তে উঠে এসেছে এই ভয়াবহ সব তথ্য। এখন পুলিশ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও অনেকের সন্ধান করছে।

এই ঘটনা আমাদের সকলের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পর ডিফল্ট পাসওয়ার্ড অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। নইলে যেকোনো সময় আপনার গোপন ফুটেজও যেকোনো জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে!

 

news