যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংসের দাম আকাশছোঁয়া পর্যায়ে পৌঁছেছে। দাম বৃদ্ধির পেছনে বড় মাংস প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলোর কারসাজির অভিযোগ এনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গরুর মাংসের দাম যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে লিখেছেন, “আমি বিচার বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি যেন তারা মাংস প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে, যারা অবৈধভাবে দাম নির্ধারণ ও বাজারে কারসাজি করছে।”
অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক্স-এ (আগের টুইটার) জানিয়েছেন, এই বিষয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত পরিচালনা করছেন কৃষি সচিব ব্রুক রোলিন্স এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গেইল স্লেটার, যিনি বিচার বিভাগের অ্যান্টিট্রাস্ট বিভাগের প্রধান—এই বিভাগ প্রতিযোগিতা ও মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়গুলো তদারকি করে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে চারটি বড় কোম্পানি—টাইসন ফুডস, কারগিল, জেবিএস ইউএসএ এবং ন্যাশনাল বিফ প্যাকিং কোম্পানি—দেশটির মোট ৮৫ শতাংশ গরুর মাংস প্রক্রিয়াজাত করে। এই কোম্পানিগুলো খুচরা বিক্রেতাদের কাছে স্টেক, রোস্ট এবং অন্যান্য মাংসজাত পণ্য সরবরাহ করে থাকে।
যদিও তদন্তে এখনো কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির নাম প্রকাশ করা হয়নি, মার্কিন প্রশাসন বলছে, জনগণ জীবনযাত্রার ব্যয়ের চাপে ভুগছে, এবং খাদ্যদ্রব্যের এই মূল্যবৃদ্ধি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
গত অক্টোবরের এক জরিপে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ আমেরিকান ভোটার মনে করেন জীবনযাত্রার ব্যয়ই তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী ইস্যু। এরই মধ্যে বিচার বিভাগ ডিম উৎপাদক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধেও একই ধরনের মূল্য কারসাজির অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি খরা ও চারণভূমির সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গবাদিপশুর সংখ্যা গত ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে গরুর মাংসের বাজারে।
সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রাউন্ড চাক বিফের দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি পাউন্ডে ৬.৩৩ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১৩.৫ শতাংশ বেশি—এবং ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
