পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুহেল আফ্রিদি সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে এবং নিরাপত্তাহীনতাকে উসকে দিচ্ছে।
টোলো নিউজের একটি অনলাইন প্রতিবেদনে মুখ্যমন্ত্রী আফ্রিদি বলেন, 'খাইবার পাখতুনখোয়া পিস জিরগা'তে অংশ নেওয়া পশতুন তাহফুজ মুভমেন্ট (পিটিএম)-এর সদস্যদের অপহরণের পেছনেও সরকারি হাত আছে। তাঁর মতে, এটি শান্তি প্রক্রিয়া এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে নতুন করে শুরু হওয়া সংলাপকে ব্যাহত করার একটি চক্রান্ত।
আফ্রিদি আরও উল্লেখ করেন, "গত ৭১ বছর ধরে পাকিস্তানে যে দৃষ্টিভঙ্গি ও রাষ্ট্রীয় নীতি চলে আসছে, তা কখনোই খাইবার পাখতুনখোয়ার পরিস্থিতিকে সত্যিকারের অগ্রাধিকার দেয়নি।"
প্রদেশটির এই নেতা জোর দিয়ে বলেন, "আমাদের অতিথিদের অপহরণের ঘটনাই প্রমাণ করে যে এখানে যে সন্ত্রাসবাদ দেখা যায়, তা স্বতঃস্ফূর্ত নয়—বরং সম্পূর্ণ সাজানো এবং নির্দিষ্ট মহলের স্বার্থে পরিচালিত।"
পশতুন অঞ্চলে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অভিযানের কঠোর সমালোচনা করেছেন আফ্রিদি। তিনি দাবি করেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে সেনাবাহিনী নিরীহ বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্যবস্তু করছে এবং যুদ্ধাপরাধের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে।
তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, মানুষ এখন কেন্দ্রীয় সরকারের গোপন সিদ্ধান্ত এবং উপজাতীয় এলাকায় জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এসব জোরজুলিমের বিরুদ্ধে তিনি স্পষ্ট ভাষায় প্রতিরোধের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, "খাইবার পাখতুনখোয়ার মানুষ এই বানানো সন্ত্রাসবাদ ও বহু বছর ধরে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া গোপন সিদ্ধান্তে ক্লান্ত।"
আফ্রিদি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "আজ আমি স্পষ্টভাবে বলছি— আমাদের নেতা, আমার পথপ্রদর্শক ইমরান খান (সাবেক পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী) যার অটল অবস্থান আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে; তিনি কখনো আপনাদের কাছে মাথা নত করেননি, আমিও করব না। আমি জনগণের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াব।"
দেশের ভেতর থেকে এমন কঠোর সমালোচনা উঠেছে এমন এক সময়ে, যখন প্রতিবেশী রাষ্ট্র আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক একদম তলানিতে পৌঁছেছে। আফগানিস্তান ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছে যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ গোষ্ঠী কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করার চেষ্টা করছে।
