ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলে এখন চলছে নজিরবিহীন অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা। একদিকে যুদ্ধমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং আইডিএফ (IDF) চিফ অব স্টাফ ইয়াল জামিরের মধ্যে চলছে ক্ষমতার চরম দ্বন্দ্ব। অন্যদিকে, তীব্র জনবল সংকটে ধুঁকতে থাকা সেনাবাহিনীর ভেতর থেকেই আসছে 'পতন' আশঙ্কার ভয়াবহ সতর্কতা।

শুধু বৈদেশিক সীমান্তে নয়, এবার এই সংকট আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের শাসনযন্ত্রের একেবারে কেন্দ্রে— সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক বৈধতা এবং প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা একসঙ্গে টালমাটাল। বিশ্লেষকদের মতে, এটি বহু-স্তরীয় এক ঝড়, যার কেন্দ্রে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ ও ১৩ সূত্রে জানা যায়, চিফ অব স্টাফ জামির প্রকাশ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি এমন ‘সাহসী নেতৃত্বের’ আহ্বান জানিয়েছেন, যারা পরাজয় স্বীকার করে পরিবর্তনের পথ দেখাতে পারে— যা কাটজের কর্তৃত্বের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় কাটজের ঘনিষ্ঠ মহল অভিযোগ করেছে, জামির "লাল রেখা অতিক্রম করেছেন"। এমনকি তারা এমনও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সেনাবাহিনী রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে তথ্য গোপন করছে।

মা’আরিভ পত্রিকার খবর অনুযায়ী— সংকট দ্রুত বাড়ছে, কিন্তু সমাধানের কোনো লক্ষণ নেই।

অন্যদিকে, সেনা নেতৃত্ব মনে করে অযথা যুদ্ধ বাড়িয়ে চললে পুরো শাসনব্যবস্থা তাতে জড়িয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতি এড়াতে এখনই সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। চ্যানেল ১৩ জানাচ্ছে, জনবল সংকটে ভুগতে থাকা সেনাবাহিনী এমন চাপ আর সহ্য করতে পারছে না।

 এই সংকটের আড়ালে বড় রাজনৈতিক ধস!
এই সামরিক সংঘাতের আড়ালে ইসরায়েলে আরও বড় রাজনৈতিক ধস তৈরি হচ্ছে। গত তিন বছরে নেতানিয়াহু ইসরায়েলকে "রাজনৈতিক অন্ধকূপে" টেনে এনেছেন— যুদ্ধ, বিক্ষোভ এবং নজিরবিহীন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এখন জর্জরিত দেশটির অবস্থা।

নিয়ম অনুযায়ী অক্টোবর ২০২৬-এ হতে যাওয়া সংসদ নির্বাচন নেতানিয়াহুর জন্য বাঁচা-মরার লড়াই। তাকে ঘিরে দুটি অভিযোগ সবচেয়ে বেশি:

নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনার পরিকল্পনা: যাতে সাময়িক সমর্থন পাওয়া যায়— বিশেষত ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহানুভূতি অথবা সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে।

যুদ্ধ পরিস্থিতি জিইয়ে রাখা: যুদ্ধ পরিস্থিতি বজায় রেখে রাজনৈতিক পরিবেশকে নিজের অনুকূলে ঠেলে দেওয়া।

পর্যবেক্ষকদের মতে, নেতানিয়াহু নিজের ক্ষমতা ও অবস্থান টিকিয়ে রাখতে পুরো শাসনযন্ত্রকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

 

news