পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার বান্নু ও মোহমান্দ জেলায় আলাদা দুটি সেনা অভিযানে ১৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। নিহতরা সবাই কট্টরপন্থী নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) এবং তাদের মিত্র গোষ্ঠীর সদস্য বলে দাবি করেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
রোববার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আন্তঃবিভাগীয় জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়। বিবৃতিতে নিহতদের 'ফিতনা আল-খারিজি' (ধর্মীয় বিচ্যুতি সৃষ্টিকারী) এবং 'ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী' হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বান্নু ও মোহমান্দ জেলায় আলাদা আলাদা অভিযান চালানো হয়। এতে মোহমান্দ জেলায় ৭ জন এবং বান্নু জেলায় ৬ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "দুই জেলায় অভিযান এখনো চলমান রয়েছে। যদি আরও কোনো ভারত-সমর্থিত ফিতনা আল-খারিজি সন্ত্রাসী পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সন্ত্রাসী হামলার বাড়বাড়ন্ত
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আফগান সীমান্তঘেঁষা পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত টিটিপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে সক্রিয় রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এই দুই সংগঠনই পাকিস্তানে নিষিদ্ধ।
ইসলামাবাদভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাত্র তিন মাসে পাকিস্তানে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত সহিংসতা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেড়েছে।
আফগান তালেবানের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ
এদিকে পাকিস্তান সরকার অভিযোগ করে আসছে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয়, প্রশ্রয় এবং অস্ত্র-রসদের সহায়তা দিচ্ছে। তবে আফগান তালেবান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সম্প্রতি কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আফগান ইসলামি চিন্তাবিদদের এক বৈঠকে স্কলাররা জানান, তারা চান না আফগানিস্তানের ভূখণ্ড কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার হোক। এ বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাহির হুসেইন আন্দারবি বলেন, এমন প্রতিশ্রুতি তালেবান এর আগেও বহুবার দিয়েছে।
