কাবুলে দায়েশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তালেবান সরকারের অভিযান প্রসঙ্গ

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের 'কারতে সাখি' এলাকায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের চার সদস্য নিহত হয়েছে। পুলিশি অভিযানে ওই চার দায়েশ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

কাবুলের "কার্তে সাখি" এলাকায় দায়েশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করে তালেবানের পক্ষ থেকে একটি বার্তা দেয়া হয়েছে। ওই বার্তায় তালেবান মুখপাত্র জানিয়েছে: বুধবার দুপুরে শুরু হওয়া ওই সংঘর্ষে চার দায়েশ সদস্য নিহত এবং আরও একজন গ্রেফতার হয়েছে। জবিহউল্লাহ মুজাহিদ আরও জানান: দায়েশ সন্ত্রাসীরা কারতে সাখি এলাকায় মুহাররামের শোকানুষ্ঠানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল।

কাবুলের পুলিশ মুখপাত্র খালেদ জাদরানও মিডিয়াকে বলেছেন: আট ঘণ্টা ধরে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সর্বশেষ সন্ত্রাসী নিহত হবার মধ্য দিয়ে ওই অভিযান সমাপ্ত হয়। জাদরান আরও জানান ওই সংঘর্ষে চার পুলিশ আহত হয়েছে এবং একজন মহিলা পুলিশসহ ২ পুলশ সদস্য নিহত হয়েছে। কাবুল শহরের নিরাপত্তা স্বাভাবিকভাবেই অপরাপর শহরের তুলনায় একটু বেশি। সেখানেই যেহেতু দায়েশ সন্ত্রাসীরা ঢুকে পড়েছে তার মানে হলো রাজধানী শহরের মতো সংবেদনশীল এলাকায় সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এ বিষয়টি তালেবান সরকারের জন্য উদ্বেগজনক। কেননা তালেবান সরকারের সকল কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু কাবুল।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর দেশে বিদ্যমান সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলোকে মোকাবেলার মধ্য দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে-এমনটা ভাবাই স্বাভাবিক। কিন্তু গত এক বছরে দায়েশের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠির সঙ্গে তেমন কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে দেখা যায় নি। আশরাফ গণি সরকারের পতনের পর তালেবান সরকার ক্ষমতা হাতে নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেশের সকল গোষ্ঠি ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। যারাই জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে তাদের বিরুদ্ধে আপ্রাণ লড়াই করা হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘিত হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কেননা বৃহৎ সন্ত্রাসী গোষ্ঠি হিসেবে দায়েশ আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ শহর কাবুলসহ বিভিন্ন এলাকায় বহু হামলা চালিয়েছে। তালেবান কেবল মহররমের শোক পালনকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অভিযান চালিয়েছে। এ ব্যাপারে আঞ্চলিক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ বাহরাম জাহেদী বলেন:

আফগানিস্তানে দায়েশ সন্ত্রাসীদের অন্যতম লক্ষ্য হল শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা। উদাহরণস্বরূপ কান্দাহারের একটি শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণের কথাটি উল্লেখ করা যায়। ওই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু সৌভাগ্যবশত পরিবেশ সম্পূর্ণ উল্টে যায়। কান্দাহারের সুন্নি জনগণ শিয়াদের রক্ত দানের জন্য দীর্ঘ লাইন তৈরি করে পরিবেশকে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ এবং মুসলমানদের ঐক্যের প্রতীকে পরিণত করেছিল।

সুতরাং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক হামলা আবারও প্রমাণ করেছে এই গোষ্ঠী সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে পারে। তাই তালেবান সরকারের দায়িত্ব হলো সকল অমানবিক কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় তাদের সমস্ত শক্তিকে কাজে লাগানো।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news