হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজা উপত্যকায় মৃত্যুর মিছিল থামেনি। এই সময়ের মধ্যে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। রাশিয়ায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত আবদেল হাফিজ নোফাল তাস বার্তা সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে রাষ্ট্রদূত নোফাল বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, যুদ্ধবিরতি থাকা সত্ত্বেও আমরা অনুমান করছি, নিহতের সংখ্যা ৪০০-এর বেশি এবং আহতের সংখ্যা তার প্রায় দ্বিগুণ।”
তিনি এই অবস্থার জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করেন। তার ভাষ্য, “এর একমাত্র কারণ হলো ইসরায়েল ক্রমাগত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে এবং গাজায় খুবই সীমিত পরিমাণ মানবিক সহায়তা ঢুকতে দিচ্ছে।”
দীর্ঘ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, গত ১১ অক্টোবর থেকে গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর আছে। কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে নিহতের মোট সংখ্যা এখন ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন।
চলতি বছরের শুরুতে ইসরায়েল আরেকটি যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় আলাদাভাবে সাহায্য বিতরণের প্রচেষ্টা চালায় ২৭ মে থেকে। এই সিদ্ধান্তের পর পুরো অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপরও গুলি চালায়, যাতে শত শত মানুষ প্রাণ হারান। সেইসঙ্গে দুর্ভিক্ষে শিশুসহ অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়।
গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। গাজাজুড়ে এই ধ্বংসযজ্ঞের কারণে ইসরায়েল এখন আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলারও সম্মুখীন।
