ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা এবার আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েল অধিকৃত ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের ড্যামন কারাগারে ফিলিস্তিনি নারী বন্দীদের ওপর চরম শারীরিক নির্যাতন, অপমান ও ধর্মীয় অবমাননার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফিলিস্তিনি বন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘প্রিজনার্স মিডিয়া অফিস’ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
পার্স-টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংগঠনটি সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হাইফার ড্যামন কারাগারের নিরাপত্তা রক্ষীরা নারী বন্দীদের জোর করে কারাগারের উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের মাটিতে বসতে বাধ্য করা হয় এবং তাদের মাথার হিজাব বা স্কার্ফ জোর করে খুলে ফেলা হয়। এছাড়া তাদের ওপর শারীরিকভাবে হামলারও অভিযোগ রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বন্দী নারীদের ভয় দেখাতে তাদের দিকে কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনটি এসব ঘটনাকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকার চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।
প্রিজনার্স মিডিয়া অফিসের দাবি, গত ডিসেম্বর মাসে চারটি আলাদা ঘটনায় এই হামলা চালানো হয়, যাতে একাধিক নারী বন্দী আহত হন। সংস্থাটি স্পষ্ট করে বলেছে, “এই নারী বন্দীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব ইসরায়েল রাষ্ট্রের।" একইসাথে চলমান নির্যাতনের মারাত্মক পরিণতির ব্যাপারে দখলদার ইসরায়েল সরকারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এবং সব মানবাধিকার ও মানবিক সংস্থাকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
যুদ্ধের পর থেকে বেড়েছে নির্যাতন
ফিলিস্তিনি বন্দী অধিকার সংগঠনগুলো জানাচ্ছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে বন্দীদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। অসংখ্য সাক্ষ্যের বরাত দিয়ে তারা বলছে, এই নির্যাতন শুরু হয় গ্রেফতারের মুহূর্ত থেকেই, যা চলতে থাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এবং কারা জীবনেও এর কোনো শেষ নেই। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বন্দীদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি ও সরঞ্জাম ব্যবহার করে নির্যাতনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
