ফিলিস্তিনে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ তীব্রতর হওয়ার রহস্য
ফিলিস্তিনের ইসলামী জিহাদ আন্দোলনের সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের তিন দিনের যুদ্ধের পর যুদ্ধ-বিরতি চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও বর্ণবাদী ও দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনে বর্বরোচিত অপরাধযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে।
দখলদার ইসরাইল গত ৫ আগস্ট গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। ফিলিস্তিন ইসলামী জিহাদ আন্দোলনের কয়েকটি সামরিক অবস্থান ওই হামলার মূল টার্গেট হলেও ইসরাইল বেসামরিক অবস্থানেও ব্যাপক হামলা চালিয়ে শিশু ও নারীসহ ৫০ জনেরও বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনিকে শহীদ করে। অবশ্য ইসলামী জিহাদের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে ইসরাইল তিন দিন পরই যুদ্ধ-বিরতি মানতে বাধ্য হয়।
কিন্তু যুদ্ধ-বিরতির পরও ফিলিস্তিনে ইসরাইলি সন্ত্রাস, যুদ্ধ-অপরাধ ও নৃশংসতা অব্যাহত রয়েছে। পশ্চিমা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী এই শক্তি ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করছে ও আটক করছে তাদের নানা সম্পদ। এ ছাড়াও ইসরাইলি অভিবাসীদের জন্য অবৈধ বসতি নির্মাণও যথারীতি অব্যাহত রেখেছে ইহুদিবাদী পেটোয়া বাহিনী।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসী ইসরাইলি সেনারা রামাল্লায় ফিলিস্তিনিদের কয়েকটি বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও মানবাধিকার সংস্থার দপ্তরে হামলা চালায় এবং এইসব দপ্তর থেকে নানা সামগ্রী আটকের পর সেসব দপ্তরকে সিল মেরে বন্ধ করার পদক্ষেপ নেয়। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি সংগ্রামীরা প্রতিরোধমূলক নানা অভিযান চালিয়েছেন। গত দুই দিনে পশ্চিম তিরে ত্রিশটি অভিযান চাালিয়েছেন তারা। এসব অভিযানের টার্গেট ছিল ইসরাইলি দখলদার ও অভিবাসীরা। আর এতে বোঝা যায় ফিলিস্তিনিরা এখন প্রতিরোধের কার্যকারিতায় বেশি বিশ্বাসী।
যে বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষণীয় তা হল বেনেত-লাপিদের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ বেশ তীব্রতর হয়েছে। এর নানা কারণের মধ্যে প্রধান কারণগুলো হল ইসরাইলের জন্মগত সন্ত্রাসী চরিত্র, কয়েকটি আরব সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া ও ইসরাইলি দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক অচলাবস্থা। অবশ্য ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের যথাযোগ্য শাস্তির ব্যবস্থা না থাকা ও বিশ্ব-সমাজের নীরবতাও অব্যাহত ইসরাইলি নৃশংসতা আর ঔদ্ধত্যের জন্য কম দায়ী নয়।
রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে ইসরাইলি সংসদের চারটি নির্বাচন হয়েছে ২০১৯ সালের পর থেকে। আগামী নভেম্বর মাসেও আরেকটি নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। খোদ ইসরাইলিদের মধ্যেই ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর প্রতি অসন্তোষ গণহারে বাড়তে থাকায় ইহুদিবাদী অভিবাসীরা আবারও নিজ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনে এখন বহিরাগতদের আগমনের চেয়েও ফিরে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। আর এতসব ব্যর্থতা ঢাকা দিতে এবং নতজানু বা আপোসকামী আরব সরকারগুলোর কাছে বাহাদুরি দেখাতে বেনেত-লাপিদের ইসরাইলি কোয়ালিশন সরকার ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতা বাড়িয়ে দিয়েছে।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে