আগ্রাসন রোধে নতুন জোট গঠন করবে ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা

ব্যাপক আড়ম্বরের সাথে এ বছর বিশ্বের বহু দেশে পালিত হয়েছে বিশ্ব কুদস দিবস। বিশেষ করে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় কুদস দিবসের বিশাল মিছিল শেষে ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের নেতা খালেদ আল বাথাশ এবং ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বক্তব্য ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তারা আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে জোট গঠনের কথা বলেছেন।

এদিকে, ইহুদিবাদী ইসরাইল এখনো ইয়েমেনে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক আগ্রাসনের সুযোগকে নিজের পক্ষে  কাজে  লাগানোর চেষ্টা করছে। তারা ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো সুরাহা না করেই আরব দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এর মোকাবেলায় ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা আরো বেশি একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়েছে এবং আগ্রাসী সরকারগুলোর বিরুদ্ধে নতুন করে জোট গঠন করতে যাচ্ছে। আরো স্পষ্ট করে বলা যায় আগ্রাসী সরকারগুলো যেমন নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছে ঠিক তেমনি প্রতিরোধ শক্তিগুলোও নিজেদের মধ্যকার ঐক্য আরো জোরদার করেছে।

বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং আমেরিকাসহ তাদের পাশ্চাত্যের মিত্ররা ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং আমিরাতের শাসক মোহাম্মদ বিন যায়েদকে অনবরত উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমিরাত ও সৌদি আরবকে ব্যবহার করে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের অভিজ্ঞতাকে তারা ইয়েমেনেও প্রয়োগ করছে ।

ইসরাইল বহু বছর ধরে ফিলিস্তিনের বিশাল জায়গা দখল করে আছে এবং এ এলাকা ছেড়ে যাওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। ঠিক একইভাবে সৌদি আরব ও আমিরাতেরও ইচ্ছা পুরো ইয়েমেন দখল করে ওই দেশটিকে তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাগ বাটোয়ারা করে নেবে। কিন্তু ইয়েমেনিদের পাল্টা প্রতিরোধের কারণে তাদের সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এ কারণে তারা যেভাবেই হোক নিজেদের দখলে থাকা ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চল এবং গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত সমুদ্র বন্দর নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। ধারণা করা হচ্ছে সৌদি আরব ও আমিরাত যে যুদ্ধবিরতি করেছে তার পেছনে তাদের অন্য কোনো নীল নক্সা রয়েছে যাতে ইয়েমেনকে ভেঙে টুকরো টুকরো করা যায়।

এবার বিশ্ব কুদস দিবস পালনের একই সময়ে ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যে কৌশলগত ঐক্য আগ্রাসীদের সমস্ত পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিতে পারে। যদিও তারা নিজেরাই আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে কিন্তু তাদের মধ্যকার ঐক্য নিঃসন্দেহে আগ্রাসীদের জন্যই পতন ডেকে আনবে। কিছুদিন আগেও ইসরাইল সামান্য অজুহাতে গাজায় হামলা চালাতো কিন্তু ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ শক্তি এখন এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যে ইসরাইল হামলা চালানোর আগে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে বিশ্ব কুদস দিবস মুসলমানদেরকে আরো বেশী ঐক্যবদ্ধ করার এবং আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে  আরো বড় ভূমিকা পালন করবে।খবর পার্সটুডের/এনবিএস/২০২২/একে

news