কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে ঘরোয়া প্রতিকার

কিডনিতে পাথর অতিপরিচিত একটি রোগ, মোটামুটি সকলেই এই রোগ সম্পর্কে জানেন। ডাক্তারি ভাষায় একে Nephrolithiasis বা Urolithiasisও বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি কম খাওয়া থেকেই মূলত কিডনির যাবতীয় অসুখের সূত্রপাত। এছাড়াও ডায়াবিটিস থাকলে কিডনির সমস্যা আসে বলে মনে করা হয়। আমাদের শরীরে বৃক্ক জোড়ার সমস্যা হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, শরীরের অতিরিক্ত ওজন, সাপ্লিমেন্ট এবং ওষুধ কিডনিতে পাথরের সৃষ্টি করে। কিডনিতে পাথর হলে মূত্রনালীর যে কোনও অংশকে প্রভাবিত করতে পারে। কখনও প্রস্রাবের রং হলুদ থেকে লালচে হয়ে গেলে, বমি বমি ভাব হলেও কিডিনির পাথরের লক্ষণ হতে পারে। তাই সমস্যা হলে আগেভাগেই সতর্ক হয়ে যেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া শুরু করতে হবে। প্রস্রাব পেলে কোনওভাবেই তা চেপে রাখবেন না। তবে ওষুধ ছাড়া কিডনি থেকে পাথর বের করতে হলে বেশ কিছু ঘরোয়া টোটকা মেনে চলতে হবে।

হার্ভার্ড হেলথের মতে, কখনও কখনও ছোট পাথর প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায় তবে কিছু ক্ষেত্রে সেগুলি মূত্রনালীতে আটকে থাকতে পারে, যার ফলে রোগীর প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া, ব্যথা, পেটের মাঝখান ও শরীরের একপাশে ব্যথা করে।

কিডনির পাথর অপসারণ করবেন যেভাবে: পাথরের আকার এবং সংখ্যার উপর নির্ভর করে তা কী ভাবে বের করা হবে। কিছু ক্ষেত্রে কিডনির পাথর যেমন কয়েক সপ্তাহের মধ্য়েই বেরিয়ে যায়, আবর কারও কারও ক্ষেত্রে পাথর বেরতে এক মাসের উপর সময় লেগে যেতে পারে। এই সমস্যার জন্য অনেক ওষুধ ও চিকিৎসা আছে। কখনও কখনও পাথর অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে। তবে হার্ভার্ড হেলথের মতে, কিছু সহজ ঘরোয়া প্রতিকার কিডনির পাথর অপসারণ বা এড়াতে সাহায্য করতে পারে।

প্রচুর পানি পান করুন​: হার্ভার্ড হেলথের মতে, যারা প্রতিদিন ২ থেকে ২.৫ লিটার প্রস্রাব করেন তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% কম। এর জন্য প্রতিদিন প্রায় ২ লিটার পানি পান করতে হবে।

ক্যালশিয়াম যুক্ত খাবার: ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। দই, সয়া পণ্য, মটরশুটি, মসুর ডাল এবং বীজ ক্যালশিয়ামের ভালো উৎস বলে মনে করা হয়। ক্যালশিয়াম অন্ত্রে অক্সালেটকে আবদ্ধ করে কাজ করে। যার ফলে প্রস্রাবে এর পরিমাণ হ্রাস পায়।

লেবু হলো মহাঔষধ: কিডনির পাথর এড়াতে লেবুর রস পান করা উচিত। এতে উপস্থিত সাইট্রেট বা সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালশিয়াম তৈরি করতে সাহায্য করে এবং পাথর রোধ করে। প্রতিদিন আধ কাপ লেবুর রস পানি মিশিয়ে পান করুন। দুটো লেবুর রস পান করলে প্রস্রাবের সাইট্রেটের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

সোডিয়াম এড়িয়ে চলুন: সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। সোডিয়াম প্রস্রাবের মধ্যে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়ায়। তাই দিনে ২,৩০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম খাওয়া উচিত নয়।

প্রাণীজ প্রোটিন এড়িয়ে চলুন: মাংস, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবারের প্রোটিনকে প্রাণীজ প্রোটিন বলা হয়। এগুলো খেলে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই এমন ধরনের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

 উল্লেখ্য, এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য। এটি কোনওভাবেই কোনও ওষুধ বা চিকিৎসার বিকল্প হতে পারে না। আরও বিস্তারিত জানার জন্য আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

news