দীর্ঘ ১৭ বছরের শেষে এবার সত্যি সত্যিই দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২৫ ডিসেম্বর তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বিএনপি নেতা-কর্মী থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন উত্তেজনা ও উৎসবের আমেজ। রাজধানীজুড়ে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, আর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকামুখী হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।

'লিডার আসছে' স্লোগানে মুখর রাজপথ
মঙ্গলবার বিকেলে পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কের বিশাল অভ্যর্থনা মঞ্চ এলাকায় দেখা গেল অসংখ্য নেতা-কর্মীর ভিড়। তারা 'লিডার আসছে', 'তারেক জিয়া আসছেন, বাংলাদেশ হাসছে'—স্লোগান দিয়ে প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনেকেই দল বেঁধে ইতিমধ্যেই রাজধানীতে পৌঁছে গেছেন।

বিশাল মঞ্চ, কড়া নিরাপত্তা
প্রস্তুতির শেষ ধাপে আছে ৪৮ ফুট লম্বা ও ৩৬ ফুট চওড়া বিশাল অভ্যর্থনা মঞ্চটি। এই মঞ্চ থেকেই সারাদেশ থেকে আসা লক্ষ লক্ষ সমর্থক ও দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন তারেক রহমান। দলীয় সূত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এই সমাবেশস্থলে এসে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন তিনি। এরপর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন এবং শেষে গুলশানের বাসভবনে উঠবেন।

সমাবেশ সফল করতে শৃঙ্খলা কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী পুরোদমে কাজ করছে। মঞ্চ ও এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপির চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।

'৫০ লাখ মানুষ জমায়েত হতে পারে'
বিএনপি এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘স্মরণকালের বৃহত্তম’ গণজমায়েতের পরিকল্পনা করেছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটতে পারে। তিনি একে 'ঐতিহাসিক শোডাউনের প্রস্তুতি' বলে উল্লেখ করেছেন।

জনসমুদ্রের উত্তাল ঢল
৩০০ ফুটের অভ্যর্থনা মঞ্চ দেখতে রাজধানী ও আশেপাশের এলাকা থেকে দলে দলে মানুষ আসছেন। অনেকে মঞ্চ ঘুরে দেখছেন, আবার কেউ কেউ সেলফি তুলছেন স্মৃতি হিসেবে। বসিলা থেকে আসা নাসিমা নামের এক নারী বললেন, "ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছি। তারেক জিয়া দেশে ফিরলে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে—এটাই আমাদের আশা।"

বুলেটপ্রুফ গাড়ি ও বিশেষ আয়োজন
তারেক রহমানের চলাচলের জন্য একটি বুলেটপ্রুফ টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো ইতোমধ্যে বিএনপির নামে নিবন্ধন করা হয়েছে। এছাড়া তার রাজনৈতিক কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য একটি বুলেটপ্রুফ বাসও আনা হয়েছে দেশে। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে প্রজেক্টরের মাধ্যমে তার আগমন মুহূর্ত সরাসরি দেখানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

গুলশানের দলীয় কার্যালয় ও তার বাসভবন নতুন করে সংস্কার এবং কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজধানী এখন যেন এক উৎসবমুখর ময়দান, যার কেন্দ্রে শুধুই একটি নাম—তারেক রহমান।

 

news