আজ আমরা আলোচনা করবো মেজর লিগ সকারের একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ নিয়ে, যেখানে লিওনেল মেসির ইন্টার মিয়ামি মুখোমুখি হয়েছিল সান জোসে আর্থকুয়েকসের। এই ম্যাচে ছিল ৬ গোলের থ্রিলার, তবে মেসির জাদু সত্ত্বেও ইন্টার মিয়ামি জয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা ছিল চরমে, আর দর্শকদের মুখে ছিল শুধু একটি নাম – ‘মেসি, মেসি’।

মেজর লিগ সকারের এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় পেপাল পার্কে, ক্যালিফোর্নিয়ার বে এরিয়াতে। এটিই ছিল মেসির প্রথম ম্যাচ এই ভেন্যুতে। ১৮ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। ম্যাচের আগের রাত থেকেই মেসি-উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছিল। টিকিটের জন্য কাড়াকাড়ি, টিম হোটেলের সামনে হাজারো ভক্তের ভিড়, এমনকি নাইট পার্টিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মেসির আগমন উপলক্ষে।

ম্যাচ শুরুর আগেই মাঠে ছিল উৎসবের আমেজ। দর্শকরা মেসির প্রতিটি ছোঁয়ায় উল্লাসে ফেটে পড়ছিল। তবে, মেসি এদিন গোলের দেখা পাননি। তিনি অন্তত চারটি সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু কোনোটিই কাজে লাগাতে পারেননি। ম্যাচটি শেষ হয় ৩-৩ গোলে, যা ইন্টার মিয়ামির জন্য ছিল হতাশার।

ম্যাচের প্রথম মিনিটেই ঝড় তুলে দেন মেসি। মাত্র ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে ইন্টার মিয়ামি গোল পেয়ে যায়। মেসি প্রতিপক্ষের ডিবক্সের কাছে দুর্দান্ত কারিকুরি দেখিয়ে বল পাঠান মাঝমাঠে। সেখান থেকে দ্রুত আক্রমণে ম্যাক্সিমিলিয়ানো ফ্যালকন বল জড়িয়ে দেন জালে। দর্শকরা তখনো সিটে ঠিকমতো বসার সময় পাননি, আর মিয়ামি এগিয়ে যায় ১-০।

কিন্তু এই উদযাপন বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মাত্র ২ মিনিট ১১ সেকেন্ডের মাথায় সান জোসে সমতায় ফেরে। ক্রিস্টিয়ানো আরানগোর গোলে স্কোর হয় ১-১। এরপর ম্যাচে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ধারা চলতে থাকে। ১৭ মিনিটে মেসি পান একটি দারুণ সুযোগ। কিন্তু তার শট গোলরক্ষকের হাতে চলে যায়। ৩৬ মিনিটে সান জোসে এগিয়ে যায়, যখন মিয়ামির রক্ষণভাগের ভুলে তারা গোল পায়।

৩৯ মিনিটে মেসি আবারো সুযোগ পান। ফাঁকায় বল পেয়েও তার হেড গোলরক্ষকের হাতে। এই মিস মিয়ামির জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায়। তবে, ৪৪ মিনিটে তাদেও আলেনদে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান, স্কোর হয় ২-২। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে ইয়ান হারকেসের গোলে সান জোসে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

বিরতির পর মিয়ামি মরিয়া হয়ে সমতার জন্য মাঠে নামে। তাদেও আলেনদে আবারো জালের দেখা পান। তার জোড়া গোলে ম্যাচে সমতা ফেরে, স্কোর ৩-৩। ৬১ মিনিটে সান জোসে গোল পেলেও তা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে মেসি পান আরেকটি সহজ সুযোগ। এবার তিনি একা মুখোমুখি হন গোলরক্ষকের। কিন্তু তার দুর্বল শট সরাসরি গোলরক্ষকের হাতে চলে যায়। এই মিসের মাধ্যমেই ম্যাচ শেষ হয় ড্র-এ।

মেসির এই হতাশাজনক পারফরম্যান্স নিয়ে ভক্তদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, মেসির এই দিনটা খারাপ গেছে, তবে তার নৈপুণ্য মাঠে স্পষ্ট ছিল। অন্যদিকে, কেউ কেউ মনে করছেন, এই ধরনের সুযোগ মিস মিয়ামির প্লে-অফের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। 

এই রোমাঞ্চকর ম্যাচের মাধ্যমে ইন্টার মিয়ামি গুরুত্বপূর্ণ দুটি পয়েন্ট হারিয়েছে। মেসি নিশ্চয়ই পরের ম্যাচে ফিরবেন তার চিরচেনা ছন্দে।

news