আজ আমরা আলোচনা করবো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের আসন্ন পাকিস্তান সফর নিয়ে। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে চলতি মাসে পাকিস্তানে যাওয়ার কথা টাইগারদের। সরকারের কাছ থেকে সবুজ সংকেত মিললেও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এখনো কাটেনি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড নতুন সূচি ঘোষণা করেছে, আর বিসিবি ক্রিকেটারদের মতামত নিয়ে এগোচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছিল অনিশ্চয়তা। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি মূলত ২৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তান সুপার লিগ -পিএসএল পুনরায় চালু হওয়ায় সিরিজটি দুই দিন পিছিয়ে ২৭ মে থেকে শুরু হবে বলে নতুন সূচি ঘোষণা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড -পিসিবি।
এদিকে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড -বিসিবির মধ্যে। এই সফরে দল পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। বিসিবি আগেই জানিয়েছিল, সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার বিষয়ে স্পষ্ট অনুমোদন পেলে তবেই তারা দল পাঠাবে।
বৃহস্পতিবার বিসিবি একটি সুখবর দিয়েছে। তারা সরকারের কাছ থেকে পাকিস্তান সফরের জন্য সবুজ সংকেত পেয়েছে। বিসিবির একটি সূত্রের বরাতে ক্রীড়ামাধ্যম ক্রিকবাজ জানিয়েছে, সরকার দলকে পাকিস্তানে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তবে, বিসিবি এখনো সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পায়নি। বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা আশা করছি, দ্রুতই আনুষ্ঠানিক চিঠি পেয়ে যাব। সরকার ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আমাদের পাকিস্তান সফরে কোনো বাধা নেই।”
তবে, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এখনো পুরোপুরি কাটেনি। বিসিবি জানিয়েছে, তারা ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলবে এবং তাদের মতামত নেবে। কিছু ক্রিকেটার নিরাপত্তার কারণে এই সফরে যেতে অনিচ্ছুক বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিসিবির একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করব। কাউকে জোর করে সফরে যেতে বলা হবে না। তাদের মতামতের ওপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এই সফরে বাংলাদেশ দলের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। পিসিবি জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশ দলের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে। সিরিজের ম্যাচগুলো সম্ভবত লাহোর এবং করাচিতে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়মিত ফিরে এসেছে।
বাংলাদেশ দল এই সিরিজের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টাইগাররা সাম্প্রতিক সময়ে মিশ্র ফলাফল দেখিয়েছে। তবে, পাকিস্তানের মাটিতে তাদের রেকর্ড তেমন ভালো নয়। এই সিরিজে দলের নেতৃত্বে থাকবেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, যিনি টি-টোয়েন্টিতে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস এবং মোস্তাফিজুর রহমানের ওপর বড় দায়িত্ব থাকবে।
পাকিস্তান দল এই সিরিজে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নামবে। বাবর আজমের নেতৃত্বে তাদের দলে রয়েছে মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহিন শাহ আফ্রিদি এবং হারিস রউফের মতো তারকা ক্রিকেটার। ঘরের মাঠে পাকিস্তান সবসময়ই শক্তিশালী, তাই বাংলাদেশের জন্য এই সিরিজ হবে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ যদি তাদের ব্যাটিং এবং বোলিংয়ে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে, তাহলে এই সিরিজে চমক দেখানো অসম্ভব নয়। তবে, নিরাপত্তার বিষয়টি দলের মনোবলের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।
পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ দলের জন্য শুভকামনা। নিরাপত্তার উদ্বেগ থাকলেও টাইগাররা যেন মাঠে তাদের সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারে, সেই প্রত্যাশা আমাদের।


