এশিয়া কাপের ফাইনাল শেষ হলেও মাঠের উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাঠের বাইরেও। পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে ভারত, কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সূর্যকুমার যাদবের দল। অভিযোগ, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (ACC)-এর চেয়ারম্যান ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মহসিন নকভি ট্রফি ও মেডেল নিয়ে নিজের হোটেল রুমে চলে গিয়েছিলেন।
এই ঘটনায় হতবাক ভারতীয় শিবির। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব বলেন,
“ক্রিকেট খেলতে এসে ট্রফি না পাওয়া, এরকম ঘটনা জীবনে দেখিনি। তবে আমার কাছে ক্রিকেটার আর সাপোর্ট স্টাফেরাই আসল ট্রফি।”
ফাইনালে পাকিস্তান রানার-আপ হয়ে পেয়েছিল ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার চেক**। কিন্তু ক্ষুব্ধ অধিনায়ক **সলমন আলি আঘা** সেই চেক মঞ্চেই ছুঁড়ে ফেলেন। এমন দৃশ্য আগে কখনও দেখা যায়নি।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অভিযোগ, তাদের দল ট্রফি নিতে অস্বীকার করায় নকভি ট্রফি ও মেডেল নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোর্ডের সচিব **দেবজিৎ শইকীয়াবলেন—
“যেহেতু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি, তাই আমরা পাকিস্তানি মন্ত্রীর হাত থেকে ট্রফি নেব না। তবে এজন্য ট্রফি নিয়ে পালানো খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আশা করি দ্রুত ফেরত দেওয়া হবে।”
বোর্ড আরও জানায়, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে নভেম্বর মাসে দুবাইয়ে হতে যাওয়া আইসিসি বৈঠকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করবে তারা।
ফাইনালের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও নাটক কম হয়নি। পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের মেডেল দেওয়ার কথা ছিল নকভির, কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা দেন অন্য এক কর্মকর্তা **আমিরুল ইসলাম**। এর মধ্যেই শুরু হয় ব্যক্তিগত পুরস্কার বিতরণ। ভারতের **কুলদীপ যাদব** পান ম্যাচসেরা আর **অভিষেক শর্মা** হন টুর্নামেন্টসেরা। তবে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় সবার সামনে শূন্য হাতে দাঁড়াল ভারত।
এর আগে থেকেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচগুলোতে একের পর এক বিতর্ক দেখা গিয়েছে।
গ্রুপ পর্বেই ভারতীয়রা পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত না মেলানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
পাকিস্তানের ব্যাটার সাহিবজাদা ফারহানের ‘স্টেনগান’ সেলিব্রেশন আর পেসার হ্যারিস রউফের ‘প্লেন ক্র্যাশ’ ভঙ্গি নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়।
ফাইনালের আগেও পাকিস্তান বোর্ড ভারতের অর্শদীপ সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে।
এমনকি ভারতের জাতীয় সঙ্গীত চলার সময় হ্যারিস ও শাহিন আফ্রিদির খোশগল্পও সমালোচিত হয়।
সবশেষে, বুমরাহ হ্যারিসকে বোল্ড করে তিনিও ‘প্লেন ক্র্যাশ’ সেলিব্রেশন করে জবাব দেন।
এক কথায়, এশিয়া কাপ ফাইনাল শুধু খেলাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। আর চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফি না নেওয়ার ঘটনা ক্রিকেট ইতিহাসে এক নজিরবিহীন অধ্যায় হয়ে রইল।


