দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারত জয়ী হলেও ইতিহাসে সম্ভবত প্রথমবারের মতো ট্রফি হাতে উঠল না। পাকিস্তানকে হারিয়ে নবমবারের শিরোপা নিশ্চিত করেছিল ভারত। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটাররা প্রকাশ্যে অস্বীকৃতি জানালেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি মোহসীন নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নেওয়ার।

স্টেডিয়ামের দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের হাতে ঝলমলে ট্রফি ওঠার জন্য। কিন্তু ভারতীয়রা নাকভির দিকে তাকালেনও না। বিকল্প হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ডের সহ-সভাপতি খালিদ আল জরউনি, যিনি ট্রফি দিতে পারতেন, কিন্তু নাকভি একগুঁয়েভাবে নিজে তা দিতে চাইলেন। ঘণ্টাব্যাপী টানাপোড়েন শেষে ট্রফি সরিয়ে নেওয়া হলো ব্যাকস্টেজে, আর বিজয়ী ভারতীয়রা ফিরে গেলেন খালি হাতে।

টুর্নামেন্টজুড়ে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ফুটেছে দুই দলের মধ্যে কদর্য বৈরিতা। টস থেকে শুরু করে ম্যাচ শেষে পর্যন্ত হাত না মেলানো, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের উসকানিমূলক অঙ্গভঙ্গি, ভারতের দিক থেকে রাজনৈতিক বার্তা—সব মিলিয়ে মাঠের লড়াই ছাপিয়ে গেছে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ।

পেহেলগাম হামলার জের টেনে ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমারের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে নাকভি আইসিসিতে অভিযোগও তুলেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি পোস্ট করেছিলেন ‘বিমান ভূপাতিত’ করার ভঙ্গির ভিডিও, যা পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর দাবির সঙ্গে সম্পর্কিত। এমন একজন ব্যক্তির হাত থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকার করায় ভারত ক্রিকেটকে নয়, রাজনীতিকেই বড় করে তুলল।

ফাইনাল শেষে দর্শকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কেউ দুয়ো দেন, কেউ স্লোগান তোলেন। পাকিস্তানি দল ড্রেসিংরুমে চলে গেছে, আর মঞ্চে একা হয়ে পড়েন নাকভি। যা হওয়ার কথা ছিল গৌরবময় শিরোপা মঞ্চ, তা রূপ নিল রাজনৈতিক তামাশায়।

এশিয়া কাপ ২০২৫ তাই মনে থাকবে ক্রিকেটের রেকর্ডের জন্য নয়, বরং রাজনীতির ছায়ায় ঢেকে যাওয়া কদর্য রাতের জন্য। ভারত জিতলেও উদযাপন হলো না; আর ক্রিকেট, সেই ভদ্রলোকের খেলা, রাজনীতির নোংরা ছোঁয়ায় হার মানল আবারও।

news