কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন পর্যটক। সেই ঘটনার রেশ থেমে থাকেনি কেবল সীমান্তে, ছড়িয়ে পড়েছে কূটনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে ক্রীড়াঙ্গনেও। হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক সংঘর্ষ, বহু হতাহতের পর যুদ্ধবিরতি এলেও দুই দেশই নিজেদের জয়ী দাবি করছে।

এই রাজনৈতিক উত্তেজনার ছাপ দেখা গেল এশিয়া কাপের ফাইনালেও। পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জিতলেও ভারতীয় দল এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মহসিন নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ক্ষুব্ধ নাকভি তখন ট্রফি নিয়ে স্টেডিয়াম ছাড়েন। ফলে ট্রফি ছাড়াই শিরোপা উদযাপন করতে হয় ভারতীয় ক্রিকেটারদের।

এরপর আরও বড় বিতর্কের জন্ম দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ তিনি ভারতের জয়কে তুলনা করেন সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের সঙ্গে। তার ভাষায়,
“খেলার মাঠেও অপারেশন সিন্দুর। ফলাফল একই—ভারতের জয়! অভিনন্দন আমাদের ক্রিকেটারদের।”

মোদির এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক উসকানি হিসেবে দেখছেন অনেকেই। পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেননি নাকভি। তিনি মোদির পোস্ট রিটুইট করে লিখেছেন,
“যদি যুদ্ধই তোমার গর্বের মাপকাঠি হয়, তবে ইতিহাস ইতোমধ্যে পাকিস্তানের হাতে তোমার লজ্জাজনক পরাজয়ের কথা লিখে রেখেছে। কোনো ক্রিকেট ম্যাচ সেই সত্য বদলাতে পারবে না। খেলায় যুদ্ধ টেনে আনা শুধু হতাশার বহিঃপ্রকাশ, আর এতে খেলাধুলার মূল চেতনা কলঙ্কিত হয়।

এদিকে, এসিসি প্রধানের ‘অক্রীড়াসুলভ’ আচরণের কঠোর সমালোচনা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। বোর্ডের সচিব সাইকিয়া জানান,
“আমরা আশা করি, ট্রফি ও পদক দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভারতের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

সব মিলিয়ে, এশিয়া কাপ ২০২৫-এর রঙিন জয় ম্লান হয়ে গেল সীমান্ত রাজনীতি আর বাকযুদ্ধে। ক্রিকেটের উৎসব রূপ নিল কূটনৈতিক টানাপোড়েনে, যা স্মরণ করিয়ে দিল—ভারত-পাকিস্তান লড়াই কেবল মাঠে নয়, আরও বহু মঞ্চে চলমান।

news