সম্প্রতি লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচের ৪৯তম ওভারের প্রথম বলেই বাবর আজমের রান ছিল মাত্র ১। দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার সেনুরান মুথুসামির বলে ক্যাচ আউটের আবেদন মেনে তাকে আউট ঘোষণা করলেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নিলেন বাবর। আর ঠিক তখনই ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে রমিজ রাজা বলে বসলেন, "এই আউট, এখন নাটক করবে।"
মাত্র কিছুদিন আগেও দলের বাইরে থাকা অবস্থায় বাবরের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন পাকিস্তানের এই সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক পিসিবি চেয়ারম্যান। কিন্তু ক্রিকেটের এই চিরচেনা খেলায় সবই সম্ভব! বাবর যখন আবারো ব্যাটিং ছন্দে ফিরেছেন, তখন রমিজ রাজাও নিয়েছেন এক বড় ইউ-টার্ন। এবার তিনি তারকা এই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে করছেন ভূয়সী প্রশংসা।
গত কয়েক বছর ধরে চলা তীব্র সমালোচনার মধ্যেও বাবরের অসামান্য ধৈর্য এবং মানসিক শক্তির জন্য তিনি এখন তার প্রতি গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
রমিজ রাজা তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাবর সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে ওয়ানডে সিরিজে ৮০৭ দিন এবং ৮৩ ইনিংস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতক করেছেন। এই সেঞ্চুরিকে এখন তার পুরনো জাদু ফিরে পাওয়ার লক্ষণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
রমিজ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি মজার ঘটনার কথা শোনান। তিনি জানান, সম্প্রতি তিনি বাবরের সঙ্গে একটি ক্যাফেতে দেখা করেছিলেন। সেই সাক্ষাতে বাবর ব্যক্তিগতভাবে তার সমালোচনার চাপ এবং দলে তার জায়গা নিয়ে হওয়া বিভিন্ন মন্তব্য সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন। তখন রমিজ তাকে সরাসরি পরামর্শ দেন, "আপনার খেলার দিকে মনোযোগ দিন, বাইরের কথায় প্রভাবিত হবেন না। আপনাকে শুধু মাঠে পারফর্ম করতে হবে।"
রমিজের মতে, বাবর তার শ্রদ্ধাশীল আচরণ এবং ধৈর্য ধরে রাখতে পেরেছেন, যেখানে মিডিয়া ও ভক্তদের চাপ থাকলেও তিনি কখনোই সরাসরি কোনো বিবাদে জড়াননি। তার খেলার ধরন এবং শৈলী বিশ্ব ক্রিকেটে সত্যিই দেখার মতো।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বাবরের ব্যাটিং স্টাইল এমন যে, তিনি প্রতিরক্ষামূলক ভাবেও খেললেও তাকে দেখতে মজা লাগে। তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই, বরং লম্বা সময় ক্রিজে থাকা এবং ইনিংসটা চালিয়ে যাওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
রমিজ রাজা শুধু বাবরের সমালোচনাই নন, তার ওপর অগাধ আস্থাও রাখেন। এই সমর্থন স্পষ্টভাবে দেখা গিয়েছিল ২০২১ সালে, যখন বাবরকে তিন ফরম্যাটেই দলের অধিনায়ক করা হয়। রমিজ রাজা চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে যাওয়ার পরেও তিনি বাবরের প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন। একজন কঠোর সমালোচক থেকে একজন উৎসাহী সমর্থকে পরিণত হওয়ার এই গল্পটি ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য বেশ চমকপ্রদ।
