কয়েকদিন আগেও তিনি ছিলেন চাপের মাঝে থাকা একজন ব্যাটার। আজ তিনি হয়ে উঠেছেন উত্তর প্রদেশের ত্রাতা। কোয়েম্বাটোরে রঞ্জি ট্রফি ২০২৫-২৬–এর এলিট গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে তামিলনাডুর বিপক্ষে দুর্দান্ত ১৭৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে দিলেন রিনকু সিংহ।

তামিলনাডু প্রথম ইনিংসে ৪৫৫ রান তুলে বড় স্কোর করেছিল। চাপে পড়া উত্তর প্রদেশের ইনিংসে পাঁচ নম্বরে নেমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রিনকু। রাতের স্কোর ৯৮ থেকে পরদিন সেটিকে পরিণত করেন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ১৭৬-এ—যা তামিলনাডুকে পুরোপুরি হতবাক করে দেয়।

বুধবার সকালে ১৫৭ বলে নিজের নবম ফার্স্ট ক্লাস সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। এরপর ২৪৭ বল খেলে শৃঙ্খলা ও আগ্রাসনের নিখুঁত মিশেলে গড়ে তোলেন এই ম্যারাথন ইনিংস। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৭টি চার এবং ৬টি ছক্কা।

এটি রঞ্জি ২০২৫-২৬ মরসুমে রিনকুর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আগের ম্যাচে তিনি ওড়িশার বিপক্ষে করেছিলেন অপরাজিত ১৬৫। জাতীয় দলের অস্ট্রেলিয়া সফরের কারণে কয়েক রাউন্ড মিস করার পর এই ইনিংস তাঁর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের প্রমাণ।

তামিলনাডুর কার্তিক যাদব এবং পি বিদ্যুৎ তাঁকে চাপে রাখলেও রিনকুর ধৈর্য ভাঙতে পারেনি কেউ। ভুল বল পেলেই বাউন্ডারি, আর প্রয়োজন হলে বড় ছক্কা—সবই ছিল এই ইনিংসে।

শিবম মাভির সঙ্গে ১০৪ রানের দারুণ জুটি গড়েন তিনি। এরপর কার্তিক যাদবের সঙ্গে ৫৮ রানের অপরাজিত অংশীদারত্ব। এছাড়া শিবম শর্মার সঙ্গে যোগ করেন আরও ৫৩ রান।

শেষ পর্যন্ত পি বিদ্যুতের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে সোনু যাদবের হাতে ক্যাচ দেন রিনকু—কিন্তু ততক্ষণে তিনি উত্তর প্রদেশকে সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে গেছেন। আকিব খান (১৪*) ও কুনাল ত্যাগীর (৫) ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ রান দলকে নিয়ে যায় ৪৬০-এ—যা তামিলনাডুর চেয়ে ৫ রান বেশি।

তামিলনাডুর সেরা বোলার ছিলেন বিদ্যুৎ—২৮ ওভারে ৪/৭৩। অধিনায়ক আর সাই কিশোর নেন ৩ উইকেট।

টিএনপিএল, আইপিএল বা ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ফিনিশার হিসেবে তাঁর নামই বেশি শোনা যায়। কিন্তু লাল বলে রিনকুর রেকর্ডও অবাক করার মতো। ৫৩টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে তিনি করেছেন ৩৬০০+ রান, গড় ৫৭-এর বেশি। রয়েছে ২২টি হাফসেঞ্চুরি—যা প্রমাণ করে দীর্ঘ ইনিংস খেলার ক্ষমতা তাঁর আছে।

গম্ভীরের কোচিং সংকটে ‘রিনকু কার্ড’ হবে কি তুরুপের তাস?

এদিকে ভারতের টেস্ট দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২ ম্যাচ সিরিজে ইতিমধ্যে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে। ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে হচ্ছে তীব্র সমালোচনা। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে কোচ গৌতম গম্ভীরের সিদ্ধান্ত নিয়েও—বিশেষ করে তাঁর টার্নিং ট্র্যাকের প্রতি অতিরিক্ত জোর আর অভিজ্ঞদের দল থেকে ছেঁটে ফেলার বিষয়টি নিয়ে।

রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন—এই অভিজ্ঞদের ‘অপ্রত্যক্ষভাবে’ সরিয়ে নতুন পরিকল্পনায় গম্ভীরকে এখন কঠিন চাপে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ।

এদিকে গম্ভীরের অন্যতম ভরসা শুভমন গিলও সিরিজ থেকে প্রায় ছিটকে গেছেন। ফলে দরজা খুলে যেতে পারে রিনকু সিংহের জন্য—একটি শেষ মুহূর্তের টেস্ট ইনক্লুশন, যা হয়তো গম্ভীরের কোচিং ক্যারিয়ারকেই বাঁচাতে পারে।

 

news